মদন প্রতিনিধিঃ জলাশয়ের পানি শুকিয়ে মাছ ধরছে ইজারাদার। রোপনকৃত প্রায় ৫০০ একর বোরো জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা। ফসল রক্ষার পানির জন্য কৃষক এখন দিশেহারা। এ ব্যাপারে নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের কাতলা ও ত্রিপন গ্রামের ৬৫ জন কৃষক নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ইজারাদারের বিরুদ্ধে ।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে, এক ফসলী বোরো জমির উৎপাদিত ফসল দিয়ে পরিবার চালায় হাওরাঞ্চলের কৃষকরা। কাতলা, ত্রিপন, মান্দুরা, ছত্রমপুরসহ কয়েকটি গ্রামের কৃষকের প্রায় ৫০০ একর জমির বোরো ফসল বোয়ালী বিলের পানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এ বছর মাঘান গ্রামের নতুন আলো মৎস্য জীবি সমবায় সমিতির সভাপতি ইছু মিয়া বোয়ালী বিল ৬ বছরের জন্য ইজারা নেয়। তার কাছ থেকে মাঘান গ্রামের আহাদুল ও কদশ্রী গ্রামের সৈকত সাব-ইজারা নিয়ে মাছ ধরার জন্য রাতের আধাঁরে বিলের পানি নদীতে ছেড়ে দিয়েছে। এতে কয়েকটি গ্রামের শতাধিক কৃষকের প্রায় ৫০০ একর জমির বোরো ফসল পানির অভাবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওই এলাকার ৬৫ জন কৃষক বুধবার (১ ফেব্রুয়ারী) বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সরজমিনে গেলে দেখা যায়, বিলের এক পাশ দিয়ে গভীর ড্রেইন করে পানি নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পানি শুকানোর সুবিধার্থে সরকারী পাকা রাস্তা কেটে দেওয়া হয়েছে। এতে পাকা রাস্তাটিও ধসে গেছে। বর্তমানে ড্রেইন পানি আটকে স্থানীয় কৃষকরা দিনরাত পাহারা দিচ্ছেন।
কৃষক মঞ্জু শাহ, জাহের আলী, স¤্রাটসহ অনেকেই বলেন,‘মাছ ধরার জন্য বিলের পানি শুকিয়েছে আহাদুল ও সৈকত। আমরা দিনের বেলায় পাহারা দিলেও রাতে তাঁরা পানি ছেড়ে দেয়। পানি আটকানোর চেষ্টা করায় আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। পানির জন্য রোপন করা জমি এখন নষ্ট হতে চলেছে। সময় মতো পানি না পেলে জমি রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
মাঘান ইউনিয়নের উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মির্জা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি এসিল্যান্ড স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। গভীর ড্রেইন খনন করে বিলের পানি নদীতে ছাড়া হয়েছে। পানির জন্য বোরো ফসলের সমস্যাসহ সরকারি পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
বিলের সাব-ইজারাদার আহাদুল মিয়া ও শওকত মিয়া জানান, কৃষকরা তাদের সুবিধা মতো ড্রেইন করে পানি নিচ্ছে।
উপজেলা সহকারি কমিশার (ভূমি) শাহনূর আলম জানান, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা পেলে ইজারা বাতিল করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :