সর্বগ্রাসী ঘুষ-দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে ফেস্টুন নিয়ে সারাদেশ ঘুরে স্মারকলিপি দিচ্ছেন হানিফ বাংলাদেশী। স্বাধীনতার ৫১বছর ধরে চলমান দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ‘বদলে যাও বদলে দাও’ শ্লোগান নিয়ে রবিবার (১৩নভেম্বর) ৩৩৪তম উপজেলা হিসেবে গৌরীপুর উপজেলায় নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, গত ৫জুন তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা থেকে এ কর্মসূচী শুরু করছেন। প্রতিদিন ৩টি উপজেলা প্রদক্ষিণ করে আগামী ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় গিয়ে ৬৪ জেলা ও ৪৯৫ উপজেলা প্রদক্ষিণ করে, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি দিয়ে এ কর্মসূচি সমাপ্ত করবেন।
কর্মসূচি সম্পর্কে হানিফ বাংলাদেশী আরো বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে সামাজিক পারিবারিক মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় চলছে। ভোট, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের উপর পূর্বের সরকারে যারা ছিলেন সে সময়ে নগ্ন হস্তক্ষেপ হয়েছে। ঘুষ দুর্নীতি অর্থ পাচার হয়েছে, সামাজিক মানবিক পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয় পূর্বেও ছিল এখন আরো চরম আকার ধারণ করেছে। আমাদের দেশের কৃষক উৎপাদনশীল, শ্রমিকরা পরিশ্রমী, ছাত্র যুবকেরা মেধাবী কিন্তু দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি, দুনীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি আমলা, দুর্নীতিগ্রস্ত বড় বড় ব্যবসায়ীরা লক্ষ কোটি টাকা বিদেশ পাচার করে আমাদের সকল অর্জনকে ব্যাহত করছে। এত সম্ভাবনা থাকার পরও দেশ যতটুকু এগিয়ে যাওয়ার কথা ততটুকু এগিয়ে যাচ্ছে না। দেশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু মানবিক মূল্যবোধের পতন হচ্ছে। আশা করি সম্ভাবনাময় এই অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে এবং চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঘুষ, দুর্নীতি ও অর্থপাচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনে যুবকদের মাঝে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সহজ শর্তে ঋণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, ভোট গণতন্ত্র আইনের শাসনের মান উন্নয়েনে আরো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি আত্মমর্যানশীল দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
হানিফ বাংলাদেশী আরো বলেন, আমি দেশের নানা অসঙ্গতি নিয়ে সব সময় প্রতিবাদ করে থাকি। ঢাকা শহরসহ দেশের জনবহুল স্থানে পাবলিক টয়লেট স্থাপনের দাবিতে আন্দোলন করেছি। ২০১৩-২০১৪ সালে দেশে যখন জ্বালাও—পোড়াও শুরু হয় তখন দুই দলের নেতৃত্ব বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ভোটাধিকারের দাবিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পদযাত্রা করেছি। নির্বাচন কমিশনকে পঁচা আপেল দিয়ে প্রতিবাদ করেছি। সংসদ ভবনের চার পাশে ১৬বার প্রদক্ষিণ করে স্পিকারের বরাবর স্বারকলিপি দিয়েছি। ২০২০ সালে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৬৪ জেলা প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক অফিসে স্মারকলিপি দিয়েছি। ২০২০ সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে পদযাত্রা করেছি। ২০২১ সালে দেশব্যাপী মার্চ ফর ডেমোক্রেসি গণতন্ত্রের জন্য গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছি। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের দাবি সংসদ ভবনের সামনে ঘন্টা বাজিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি। ২০২১ সালে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রনয়নের দাবিতে মাথায় ভোটের বাক্স নিয়ে ৬৪ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। এখন ৫০ বছর ধরে চলমান দুর্নীতি-দুঃশাসের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়ে কর্মসূচি শুরু করেছি। আমার এই কর্মসূচিতে দেশবাসী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিক ভাইদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।
আপনার মতামত লিখুন :