রঞ্জন মজুমদার শিবু : আগামী ১৮ জুন জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করার লক্ষ্যে ময়মনসিংহ বিভাগীয় অবহিতকরণ ও কর্ম পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৪ জুন) সকালে ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক স্বাস্থ্য এর কার্যালয় আয়োজিত এবং জাতীয় পুষ্টি সেবা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে পরিচালক স্বাস্থ্য এর কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ ক্যাম্পেইনে ১৮ জুন সকাল ০৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগের ৯০০০ হাজার কেন্দ্রে ৬-১১ মাস বয়সী ১৯৯২৫৫ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ১৬৩১৯৪১ জন শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থা সহ সকল ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনও গুরুত্বপূর্ন ভ’মিকা রাখছে। এই ক্যাম্পেইনের ফলে স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তন এসেছে। এতে করে একদিকে যেমন শিশুর রোগব্যাধি কমেছে এবং মৃত্যুহারও কমেছে। কমিশনার আরো বলেন, ক্যাম্পেইন চলাকালে কোন গুজবে কান দিবেন না। কোন কিছু হলে তাৎক্ষনিক আমাদের অবহিত করবেন। প্রাথমিক ভাবে ব্যবস্থা নিতে পারলে কেউ অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবে না। এ বিষয়ে সকলে সতর্কভাবে কাজ করতে হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা: মো: শফিউর রহমান। তিনি বলেন, শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তির ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন এ অন্যতম গুরুত্বপূর্ন এক অনুপুষ্টি। এই ক্যাম্পেইনের ফলে শিশুদের অনেক রোগ কমে গেছে। ভিটামিন এ শিশুর শরীরকে যেমন প্রতিরক্ষা করে তেমনি অপুষ্টি থেকেও রক্ষা করে। সুস্থ্য জাতি গঠনে সময়মত শিশুদের ভিটামিন এ খাওয়াতে হবে। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সুস্থ্য শিশু গড়ে তুলব এবং যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করতে হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক ডা: মো: আব্দুল কদ্দুছ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, আইইডিসিআর এর উর্ধ্বতন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা: মো: শাহ আলম। মূল বিষয়বস্তুর উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মনিরুজ্জামান। সভায় ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলার সিভিল সার্জন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক সহ সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এবছর ময়মনসিংহ বিভাগে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন এর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬-১১ মাস বয়সী শিশু ১৯৯২৫৫ জন এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশু ১৬৩১৯৪১ জন ও মোট কেন্দ্র ৯০০০। এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় ৬-১১ মাস বয়সী শিশু ৮৫৯১০ জন, ৬-১১ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ৪৭০ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশু ৭৫৫৪৭৮ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ১৫৫০ জন, ৬-১১ মাস বয়সী মোট শিশু ৮৬৩৮০ জন এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী মোট শিশু ৭৫৭০২৮, টোটাল টার্গেট ৮৪৩৪০৮, মোট কেন্দ্র-৩৫১৯। নেত্রকোণা জেলায় ৬-১১ মাস বয়সী শিশু ৩৯৫৮২ জন, ৬-১১ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ৪২২ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশু ৩২৬৭২৬ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ১৫৮২ জন, ৬-১১ মাস বয়সী মোট শিশু ৪০০০৪ জন এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী মোট শিশু ৩২৮৩০৮, টোটাল টার্গেট ৩৬৮৩১২, মোট কেন্দ্র-২১৪২। জামালপুর জেলায় ৬-১১ মাস বয়সী শিশু ৩৭১৭৯ জন, ৬-১১ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ১৫৩ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশু ২৯৬৫৩৯ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ৫৩৩ জন, ৬-১১ মাস বয়সী মোট শিশু ৩৭৩৩২ জন এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী মোট শিশু ২৯৭০৭২, টোটাল টার্গেট ৩৩৪৪০৪, মোট কেন্দ্র-১৬৯২। শেরপুর জেলায় ৬-১১ মাস বয়সী শিশু ২৫৯১১ জন, ৬-১১ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ১৯৮ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশু ১৯১৩৩৯ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ৫২১ জন, ৬-১১ মাস বয়সী মোট শিশু ২৬১০৯ জন এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী মোট শিশু ১৯১৮৬০, টোটাল টার্গেট ২১৭৯৬৯, মোট কেন্দ্র-১৩৪৬। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৬-১১ মাস বয়সী শিশু ৯৩৫৪ জন, ৬-১১ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ৭৬ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশু ৫৭৫০৪ জন, ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশু ১৬৯ জন, ৬-১১ মাস বয়সী মোট শিশু ৯৪৩০ জন এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী মোট শিশু ৫৭৬৭৩, টোটাল টার্গেট ৬৭১০৩, মোট কেন্দ্র-৩০১টি।
আপনার মতামত লিখুন :