স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ডিবি পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ১৬ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় তিন ডাকাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডাকাতদলের কাছ থেকে লুন্ঠিত ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও ডাকাতিতে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, ডিবির কটি এবং ওয়াকিটকি উদ্ধার করে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতভর ঢাকা ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেফতার করে। পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, নান্দাইলের এজেন্ট ব্যাংক ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন গত ৮ অক্টোবর ইসলামী ব্যাংক পিএলসি ভালুকা শাখা থেকে ১৬ লাখ টাকা তুলে সিএনজি যোগে যাওয়ার সময় গফরগাঁও এলাকায় একদল ডাকাত টাকাসহ বাদীকে তুলে নিয়ে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানা এলাকায় গিয়ে টাকা ও ব্যবহৃত ২ টি মোবাইল ফোন রেখে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে প্রাইভেটকারটি নিয়ে চলে যায়। উক্ত ঘটনায় ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে গফরগাও থানায় মামলা করেন। এসপির নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে এসআই শাহ্ মিনহাজ উদ্দিন, এসআই রেজাউল আমীন বর্ষন, এসআই পরিমল চন্দ্র সরকার, এসআই কমল সরকার, এসআই রূপন কুমার সরকার ও সঙ্গীয় ফোর্সসসহ একটি চৌকশ টিম ডাকাতির রহস্য উদ্ঘাটনের নিমিত্তে অভিযানে নামেন।
ধারাবাহিকভাবে অভিযানে ডিবি পুলিশের এ টিম গাজীপুর ও ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুক্রবার রাতে ডাকাতদলের অন্যতম সদস্য সিরাজগঞ্জের মোঃ আনোয়ার হোসেনকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ডাকাতের তথ্য মতে, ভোর রাতে ঢাকার সাভার ব্যাংক টাউন থেকে উক্ত ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী রাজবাড়ীর লিটন কাজী ওরফে দেলোয়ার কাজী গ্রেফতার করে এবং আশুলিয়ার ভাড়াবাগ থেকে অপর ডাকাত গোপালগঞ্জের মোঃ রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এর মাঝে মোঃ আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে লুন্ঠিত ৮০ হাজার টাকা, লিটন কাজী ওরফে দেলোয়ার কাজীর কাছ থেকে লুণ্ঠিত আড়াই লাখ টাকা এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার ১টি ওয়াকিটকি, ১টি হ্যান্ডকাফ ও ৩২টি ডিবির কটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ডাকাত রুবেল মিয়ার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ১ লাখ ৪০ হাজার উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরো জানান, গ্রেফতারকৃত ও আসামীরা এর আগে ভালুকার জামিরদিয়া এমএল ডাইংয়ের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রাইভেটকার যোগে র্যাবের পরিচয় দিয়ে জনৈক শুভান আলীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও ৩১ টি মোবাইল এবং ভালুকার হবিরবাড়ী সীডষ্টোর বাদশাগ্রুপের কামাল ইয়ার্ল্ড লিমিটেডের সামনে প্রাইভেটকার যোগে র্যাবের পরিচয়ে জনৈক কানাই চন্দ্র বর্মনকে গতিরোধ করে তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এ চক্রের মুলহোতা গ্রেফতারকৃত লিটন কাজী ওরফে দেলোয়ার কাজীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০টির অধিক ডাকাতিসহ দস্যুতা ও মাদক মামলা এবং মোঃ রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে ২টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ডিবির ওসি ফারুক হোসেন বলেন, তাদেরকে শনিবার আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর মাঝে আনোয়ার ও রুবেল মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। মামলাটি তদন্ত চলছে। অবশিষ্ট লুন্ঠিত টাকা উদ্ধার ও ডাকাতির ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। পুলিশ সুপার আরো বলেন, গত ৯ অক্টোবর ভালুকার বাটাজোরে স্কুল ছাত্রী হত্যাকান্ডের মুলহোতা রিপন মিয়াকে টাঙ্গাইল থেকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। রিপন মিয়া ঐ স্কুল ছাত্রীর স্বামী। কিছুদিন আগে তার সাথে বিয়ে হলে বিয়ের ৯ দিনের সে তার কর্মস্থল সৌদিতে চলে যায়। এর পর থেকে তাদের মাঝে সন্দেহ চলতে থাকে। দাম্পত্য কলহ বাড়তে থাকে। প্রবাসী স্বামী রিপন কাউকে না জানিয়ে দেশে চলে আসে। গত ৯ অক্টোবর রিপন গোপনে তার স্ত্রীর খোজ খবর নেয়। পথিমধ্যে স্বামী স্ত্রীর মাঝে তর্কবিতর্ক হয় এবং এক পর্যায়ে মুখোস পরে দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে যায় রিপন।
আপনার মতামত লিখুন :