দর্পণ বিসর্জন ও প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্যদিয়ে ময়মনসিংহে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি


swadeshsangbad প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৬, ২০২২, ৫:৪৭ পূর্বাহ্ন / ৩১২
দর্পণ বিসর্জন ও প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্যদিয়ে ময়মনসিংহে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি

গতকাল বুধবার (৫ অক্টোবর) সকালে দেবীর পায়ে পপুস্পাঞ্জলী, পূজা সমাপন, দর্পণ বিসর্জন, প্রতিমা নিরঞ্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহে সনাতন ধর্মালম্বীদের ৫দিন ব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাবিজয়া দশমী সমাপন ।
এদিন সকাল সাড়ে ৬টায় রামকৃষ্ণ আশ্রম ও মিশনে মহাবিজয়া দশমী (বিহিত) পূজা এবং পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিমা নিরঞ্জন ও শান্তিজল গ্রহণ। এদিন সকালে মহাবিজয়া দশমীতে রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য ও রেঞ্জ ডিআইজির সহধর্মীনি মধু ছন্দা ভট্টাচার্য্য সহ পূজারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পূজায় পুরোহিত ছিলেন শ্রী সমর রঞ্জন চক্রবর্তী, তন্ত্রধারক ছিলেন স্বামী কল্যানদানন্দ ইমন মহারাজ। অঞ্জলী মন্ত্র পাঠ করান রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী ভক্তিপ্রদা নন্দ মহারাজ।
বিজয়া দশমী উপলক্ষে গতকাল বিকেলে ময়মনসিংহ আর্যধর্ম জ্ঞান প্রদায়িনী সভা (ধর্মসভা) দূর্গাবাড়ী মন্দির কমিটির আয়োজনে মন্দির প্রাঙ্গন থেকে এক বিজয়ার শুভাযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাচারীঘাটস্থ ব্্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে গিয়ে উপস্থিত হন। একই ভাবে পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ নগরীর অন্যান্য মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ভক্তবৃন্দদের সাথে নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে উপস্থিত হন এবং একে একে প্রতিমা বিসর্জন দেন।
এদিকে কাচারীঘাটস্থ ব্্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বির্সজন ঘাটে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে প্রতিমা বির্সজনে আসা পুজারী ভক্তবৃন্দদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্যানেল মেয়র-১ আশিফ হোসেন ডন। এসময় বিশর্জন ঘাটে বক্তব্য রাখেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভ’ঞা প্রমুখ। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব পারভেজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বী মিয়া, শাহিনুল ইসলাম ফকির, প্যানেল মেয়র-৩ সামিমা আক্তার, মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাসনিয়া তানজিম, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা দীপক মুজুমদার, কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ কামাল আকন্দ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, কাউন্সিলর ফারুক হাসান, শীতল সরকার, হামিদা পারভীন, রুকশানা শিরিন, জনসংযোগ কর্মকর্তা শেখ মহাবুল হোসেন রাজিব, জেলা আওয়ামীলীগের ক্রিড়া সম্পাদক রেজাউল হাসান বাবু, স্বেচ্ছা সেবকলীগ সাবেক সভাপতি এডভোকেট এ বি এম নুরুজ্জামান খোকন সহ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, কর্মচারী জেলা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন পূজামন্ডপের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিপুল সংখ্যাক ভক্ত, দর্শনার্থী ও সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমা নিরঞ্জনকালে ঘাটে ও রাস্তায় সার্বিক আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিস টিম ও স্বেচ্ছা সেবক নিয়োজিত ছিলেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ অঞ্চলে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) ছিল মহা-নবমী। মন্ডপে মন্ডপে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ছিল উপচেপড়া ঢল। মহা-নবমী পূজা শেষে মন্ডপে মন্ডপে অঞ্জলী প্রদান, চন্ডীগ্রন্থ পাঠ, প্রার্থনা ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য গত সোমবার ষষ্ঠী পূজা, দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। অসুরের বিনাশ আর শান্তি কল্যাণ ও সমৃদ্ধি লাভের আশায় যুগযুগ ধরে মা দুর্গার আরাধনা করে আসছে হিন্দু সম্প্রদায়। বিজয়া দশমীতে ময়মনসিংহ মহানগরী ও এর আশপাশের এলাকায় ব্্রহ্মপুত্র নদে ও পারিবারিক জলাশয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দেবীদুর্গাকে বিসর্জন দেয়।