শ্যামল চৌধূরী : ভাটিবাংলার রাজধানীখ্যাত নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা। মোহনগঞ্জের মাছের ঐতিহ্য বেশ পুরনো। এখানে রয়েছে একটি বিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। পাশেই রয়েছে মাছঘাট। এছাড়া এখানে রয়েছে ছোট বড় মৎস্য আড়ত। বিভিন্ন জাতের মাছের সমারোহ রয়েছে অনেক। সন্ধ্যা থেকে জমে উঠে মোহনগঞ্জের মাছঘাট। মাছ কেনাবেচার জন্য মাছঘাটের ঐতিহ্যও বেশ পুরনো। এক সময় ভাটি অঞ্চলের মাছ ভাড়ে ভাড়ে ও ঘোড়ায় চড়িয়ে মাছ আসতো মোহনগঞ্জের এই মাছ ঘাটে। এমন দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না। বর্তমানে ঘাটে ঘাটে মাছঘাট হয়েছে। বিভিন্ন দিক দিয়ে মাছ চালান হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রচলন আছে মাছ খাবেন তো মোহনগঞ্জ যাবেন। কোন যায়গায় বেড়াতে গেলে মোহনগঞ্জের পরিচয় দিলে বলা হতো আরে আপনি তো মাছের দেশের মানুষ। তবে আগের সেই জৌলুশ এখন আর নেই। মাছের দেশেও মাছের আকাল। দিন দিন হাওর বাওর বিল ঝিল থেকে অনেক দেশী প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। পোনা নিধন অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার বিষ প্রয়োগের ফলেও ক্রমেই বিলুপ্তির পথে দেশী প্রজাতি ও স্বাদু পানির মাছ। মোহনগঞ্জের আরও একটি ঐতিহ্য হলো শুঁটকি মাছ। শীতের শুরুতে জমে উঠে এখানকার শুঁটকির বাজার। প্রতি বুধবার কাকডাকা ভোর থেকে বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মোহনগঞ্জের গরুহাট্টায় জমা হতে থাকে বিভিন্ন জাতের শুঁটকি মাছ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যাপারীরা আসে শুঁটকি কিনতে। দরদাম শেষে প্যাকেটজাত করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুঁটকি চালান হয়। এভাবেই মাছের ঐতিহ্য নিয়ে আজো মাছের দেশ হিসেবে মোহনগঞ্জের সুনাম অটুট রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :