মো. আব্দুস ছাত্তার : সহপাঠীর ছুরিকাঘাতে অপর স্কুল বন্ধু খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নিহত সহপাঠীর নাম আবু সাঈদ (১৭)। সে হরেকৃষ্ণ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনায় গতকাল ৩ আগস্ট রাত সোয়া ১২ টার দিকে ফুলবাড়িয়া থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ৭/৮জন কে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা আবু তাহের। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার দায়ে পুলিশ ৪ জন কে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এলাকাবাসী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া সড়কের দেওখোলা বাজারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কিশোর গ্যাং এর ছুরিকাঘাতে হরেকৃষ্ণ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবু সাইদ এর পরিকল্পিত মৃত্যুর জন্য দায়ী ঘাতক কিশোর গ্যাং দলের সকল হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় সাইদের সহপাঠী ছাড়াও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইভটিজিং সংক্রান্ত ঘটনায় মঙ্গলবার সুমন ও সাইদ গংদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দাওয়া-পাল্টা দাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি এলাকার বড় ভাই নামে পরিচিতরা মিমাংসা করে। বুধবার (২ আগস্ট) সকাল সোয়া ১০ টার দিকে দেওখোলা ইউনিয়ন হাসপাতাল রোডে একটি প্রাইভেট সেন্টারে পড়তে আসে এ সব শিক্ষার্থীরা। এমন সময় হঠাৎ তর্কে জড়িয়ে পড়ে সাইদ ও সুমন গংরা। একই উপজেলার কুশমাইল ইউনিয়নের টেকিপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের পুত্র সুমন মিয়া হঠাৎ তার হাতে থাকা চাকু দিয়ে সহপাঠী সাঈদ (১৭) ও শ্রাবণ (১৭) কে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এদের মধ্যে সাইদের অবস্থা আশংকাজনক হলে ঐদিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৭ টার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক সাঈদ কে মৃত ঘোষনা করেন।
রাতে শ্রাবণের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষনে আছেন। শ্রাবণ শুভরিয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর পুত্র। সেও হরেকৃষ্ণ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত প্রধান আসামী কুশমাইল টেকিপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান হবির পুত্র সুমন মিয়া ও তার সহযোগি কালীবাজাইল গ্রামের কছিম উদ্দিনের পুত্র কাউসার, সিরাজুল ইসলামের পুত্র রাব্বিল হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন ওরফে মোবা এর পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে। এরা সবাই মন্ডলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। তবে মামলার ৫ নম্বর আসামী লক্ষীপুর গ্রামের আকাশ পলাতক রয়েছে।
থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শাহীনুজ্জামান খান বলেন, ঘটনায় নিহতের পিতা আবু তাহের বাদী হয়ে বুধবার দিনগত রাত সোয়া ১২ টায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ৭/৮ জনকে অজ্ঞাতনামা করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ঘটনার মুল রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধান আসামী সুমন মিয়া কে সাথে নিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধারে নামে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যমতে, দেওখোলা বাজার সংলগ্ন পুকুর (ডোবা) থেকে চাকু উদ্ধার করে পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :