মো. আব্দুস ছাত্তার : সহযোগিতা মানুষ করতে চায় প্রতিবন্ধিকতা হয় সময় ও ক্ষেত্র। তবে ভিন্ন চিত্রও আছে সমাজে সম্পদ আছে কিন্তু বখিল। নিজের সম্পদে পাহাড় গড়তে চায়। ঐ সম্পদ তাকে কখনো বাঁচায় না। সহযোগিতা ও সহযোহিতা বিমুখ দুইয়ের সমন্বয়েই সমাজ। যাক সে কথা। এ পর্যন্ত যারাই সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিয়ে কাজ করতে চেয়েছেন তারা কখনোই বিমুখ হননি। হোক সেটা নিজের অর্থ দিয়ে অথবা সহযোগিতা নিয়ে। উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্য যদি অলাভজনক হয় তাহলে তারা যে কোন উদ্যোগ নিয়ে সফল হতে পারেন নি:সন্দেহে। ইতিহাস বলছে যারা উদ্যোগ গ্রহণ করছেন তারা একের পর এক উদ্যোগ গ্রহণ করছেন আর সফল হচ্ছেন। এমনি এক উদ্যোক্তা বা স্বেচ্ছাসেবীর নাম শাকিল চৌধুরী। তিনি পেশায় একজন স্বাস্থ্যকর্মী। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শাকিল। তিনি ফুলবাড়ীয়া হেল্প লাইন এর এডমিনও। যথেষ্ট পারিপাশি^ক চাপের মধ্যেও তিনি সামাজিক বিভিন্ন উদ্যোগ করে চলেছেন।
সম্প্রতি শাকিল চৌধুরী ফুলবাড়িয়া উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের জোরবাড়ীয়া উত্তর পাড়া গ্রামের রিক্সা চালক খাইরুল এর প্রতিবন্ধি ছেলের জন্য একটি হুইল ক্রয়ে সহযোগিতার আবেদন করেন। আবেদনটি আধ ঘন্টার মধ্যে মমনসিংহ প্রান্ত স্পেশালাইড হাসপাতালের কর্ণধার মুনসুর আলম চন্দন এর সহধর্মিনী ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভবানীপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নাদিয়া আলম এবং ফুলবাড়িয়ার আলোকিত মানুষ বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মনিরুল ইসলাম এবং তরুণ সেবক মনিরুজ্জামান শান্ত এর নজরে আসলে সমাধান হয়ে যায়।
রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ থেকে হুইল চেয়ারটি এনে অসহায় রিক্সাচালক খাইরুলের বাড়িতে পৌঁছে দেন স্বাস্থ্য কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক শাকিল চৌধুরী। নতুন চেয়ার দেখে প্রতিবন্ধি সিয়াম খুশিতে বাক বাকুম। অনানুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা চেয়ার প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যাংকার মো. জাকির হোসেন খান।
প্রতিবন্ধি সিয়ামের পিতা রিক্সাচালক বলেন, আমার ছেলে সিয়াম কে সকালে খাওয়ানো শেষে রিক্সা নিয়ে বের হই। সারাদিন রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে দু’মুঠো আহার জোগারের আশায় রিক্সা চালাই। আবার রাতে এসে আমার সিয়াম খাওয়াই। সে আমার হাত ছাড়া খায় না। আমার সিয়াম যখন ছোট ছিল তখন তাকে এখান থেকে ওখানে আনা নেওয়া সহজ ছিল কিন্তু দিন যত অতিবাহিত হচ্ছে ততই কঠিন হচ্ছে। বাবা খাইরুল আরও বলেন, সকাল বেলা প্র¯্রাব পায়খানার সকল কাপড় চোপড় পরিস্কার করি। আবার তার মাও পরিস্কার করে। তবে মায়ের কোলে ৩ মাসের এক শিশু সন্তান রয়েছে।
স্বাস্থ্যকর্মী শাকিল চৌধুরী জানান, সিয়াম কে নিয়ে সাভার প্রতিবন্ধি হাসপাতাল নিয়ে গত দুইদিন আগে গিয়েছিলাম। ডাক্তার দেখে বলেছেন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সিয়াম সবার বড়? দীর্ঘ ১০ বছর ১২ বছর এভাবেই দিন কাটছে? হয়ত খাইরুলের ঢাকা যাওয়া সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে অভাবে সংসারে তার একমাত্র উপার্জনের বাহন রিক্সাটি চুরি হয়ে যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুল করিম ও দানভীরদের সহযোগিতায় একটি পুরাতন রিক্সা ক্রয় করে দেওয়া হয়। যারা কল করে সিয়ামের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের প্রতি রইল অসীম কৃতজ্ঞতা শ্রদ্ধা ভক্তি। সৃষ্টিকর্তা যেন আপনাদের এই দানকে কবুল করুন আমীন।