বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠের আহবানে দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল-গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী


swadeshsangbad প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১০, ২০২২, ৩:৪৫ অপরাহ্ন / ১৬৪
বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠের আহবানে দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল-গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী

রঞ্জন মজুমার শিবু : গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি বলেছেন বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের আজকের এই বিশেষ দিনে প্রথমে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি বিজয়ের মহানায়ক, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, বাঙালির রাখাল রাজা দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যার বজ্র কন্ঠের আহবানে সাড়া দিয়ে এদেশের আবাল বৃদ্ধ বনিতা কৃষক শ্রমিক মজুর সকল শ্রেণী পেশার মানুষ নিজের জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল, ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা এবং লাল সবুজের পতাকা। স্মরণ করি শহীদ জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদ, নির্যাতিত ২ লক্ষ মা বোন এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধায় নগরীর ছোট বাজার (মুক্তিযোদ্ধা সরণি) মুক্ত মঞ্চে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান মালার প্রথম দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির জাতীয় জীবনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। একদিকে সজন হারানো আর্তনাদ, নির্মম গনহত্যা, এবং ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতার শিকার, অন্যদিকে এই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা লাভ। ডিসেম্বর বাঙালির জাতীয় জীবনে একদিকে যেমন সজন হারানোর আর্তনাদে বেদনা বিধুর অন্যদিকে বিজয়ের আনন্দে উদ্ভাসিত উজ্জ্বল একটি মাস। ডিসেম্বরের প্রথম দিকেই মুক্তিযোদ্ধা এবং ভারতীয় যৌথ বাহিনীর উপুর্যুপরি আক্রমনে পর্যুদস্ত ও বিপর্যস্ত পাক হানাদার বাহিনী পিছু হটতে থাকে এবং দেশের বিভিন্ন জেলা পর্যায়ক্রমে শত্রুমুক্ত হতে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ শত্রুমুক্ত হয়। ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ মুক্ত দিবসে সকল শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি আমার বিন¤্র শ্রদ্ধা। আমি শহীদ পরিবার ও সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার সর্বাঙ্গিন সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। পরলোকগত সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো এদেশে স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীচক্র দেশ ও জনবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রমে লিপ্ত। সম্প্রতি মহাসমাবেশের নাম করে বিএনপি জামাত প্রতিক্রিয়াশিল চক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে তারেক জিয়ার নির্দেশে রাজনৈতিক কর্মসূচির আড়ালে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা করছে। তারা বিদেশী মিশন ও এম্বাসীতে গিয়ে দেশ বিরোধী প্রচার প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তাদের এসব প্রচার প্রপাগান্ডা ও চক্রান্ত সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি, তরুন প্রজন্মে জাতির পিতার আদর্শের সৈনিকদের প্রতি আমার আহ্বান, মুক্তিযোদ্ধাদের আদর্শ ধারন করে প্রতিক্রিয়াশীল বিএনপি জামাত জোটের সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। সেই আহ্বান রেখে সবার সুখ সমৃদ্ধি ও সুস্বাস্থ কামনা করে শেষ করছি। সবাই ভাল থাকবেন।
জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদ সদস্য মনিরা সুলতানা মনি, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভ’ঞা, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এহতেশামুল আলম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন।
আলোচনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সাদেকুর ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মোমেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম সরকার রবার্ট, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবু তাহের, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী আজাদ জাহান শামীম, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাবেক সভাপতি ফেরদৌস আরা মাহমুদা হেলেন, আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠী জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট মোঃ আবুল কাসেম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড এর সদস্য নীহারিকা পারভীন ইভা প্রমুখ। উপস্থাপনায় করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড মুক্তিযোদ্ধা পল্লী শাখার সাধারণ সম্পাদক এ বি এম ফজলে রানা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড জেলা শাখার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক বিলকিছ আক্তার রুমা। এসময় জেলা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ, আওয়ামীলীগ ও অংগ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে থাকবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।