স্টাফ রিপোর্টার ঃ ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেছেন, প্রায় দেড় কোটির বেশি মানুষ প্রবাসে বসবাস করেন। শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই ১২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বিদেশের মাটিতে। তারা প্রবাস থেকে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন শুধু তাই নয় তারা আমাদের অনেক দিক থেকে রিলিফ দিয়েছেন। কিন্তু প্রবাসে কাজ করছেন এমন অনেক মানুষ এখনো সেই দেশের ভাষা জানেন না, অনেকেই কোন কাজের দক্ষতা অর্জন না করেই বিদেশে গেছেন। ফলে অনেকেই কাজ না পেয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হন বা তাদের উপার্জন কম হয়। এ জন্যই ভাষা শিখে ও দক্ষ হয়ে বিদেশ যাওয়ার উপরে গুরুত্ব দিতে হবে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর মাসকান্দায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
“প্রবাসীর অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, আমাদের সবার” প্রতিপাদ্য নিয়ে বর্ণাঢ্য র্যালী, প্রবাসী মেলা/জবফেয়ার ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৪ উদ্যাপন করা হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও জেলা ওয়েলফেয়ার সেন্টারের আয়োজনে এদিন সকালে বর্ণাঢ্য র্যালীতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। র্যালী শেষে প্রধান অতিথি অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে টিটিসি প্রাঙ্গণে আয়োজিত প্রবাসী মেলা ও জব ফেয়ার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। পরে টিটিসি কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ মাহতাব উদ্দিন এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা খাতুন। প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন কর্মসংস্থান ব্যাংকের সহকারী পরিচালক অমিত সরকার। সভায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ মাইগ্রেশন এন্ড রিইন্টিগ্রেশন সাপোর্ট সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর নাসিম উদ্দিন। তিনি নিজ বক্তব্যে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের নানা কার্যক্রম বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত ইমপ্রুভড সাসটেইনেবল রিইন্ট্রিগ্রেশন অব বাংলাদেশি রিটার্নি মাইগ্রেন্টস (প্রত্যাশা-২) প্রকল্পের অধীনে জেলায় গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে সবাইকে জানান।
অনুষ্ঠানে জেলা ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুল হাসান তাহেরী, ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর আলমসহ সরকারি ও বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিদেশগমগনেচ্ছু ও বিদেশ-ফেরত অভিবাসী এবং তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন । এছাড়াও অনুষ্ঠান শেষে ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে শিক্ষাবৃত্তি চেক ও বিদেশে মৃত্যুবরণকারী এক প্রবাসীর পরিবারের সদস্যকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লাখ টাকার চেক এবং অপর এক পরিবারের হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক। শিক্ষাবৃত্তি চেক এর মধ্যে ছিল এস.এস.সি ১৩ জনকে ২৭ হাজার টাকা করে মোট ৩ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা এবং এইচ.এস.সি. ১০ জনকে ৩৪ হাজার টাকা করে মোট ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। এ বছর জেলায় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক হিসেবে পুরস্কার গ্রহণ করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ।
আপনার মতামত লিখুন :