মহা নবমীতে নগরীর পূজামন্ডপে ছিল ভক্ত দর্শনার্থীদের ঢল ঃ আজ বিজয়াদশমী


swadesh sangbad প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২৩, ২০২৩, ৪:১৩ অপরাহ্ন / ১০৭
মহা নবমীতে নগরীর পূজামন্ডপে ছিল ভক্ত দর্শনার্থীদের ঢল ঃ আজ বিজয়াদশমী

আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) ০৬ কার্তিক শারদীয় দুর্গাপূজার মহাবিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের দিন। সকাল সাড়ে ৬টায় মহাবিজয়া দশমী (বিহিত) পূজা, সকাল সাড়ে ৮টায় পুস্পাঞ্জলী এবং পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটে। বিকেলে প্রতিমা নিরঞ্জন ও শান্তিজল গ্রহণ। গত শুক্রবার ষষ্ঠী পূজা, দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। অসুরের বিনাশ আর শান্তি কল্যাণ ও সমৃদ্ধি লাভের আশায় যুগযুগ ধরে মা দুর্গার আরাধনা করে আসছে হিন্দু সম্প্রদায়।‘যেওনা নবমী তিথি পোহাইওনা রাত’ ভক্তজনদের মায়াভরা-প্রেমভরা এই ভাবনার মাঝেই ৫টি দিন যেন হঠাৎ করেই কেটে গেল। ভক্তদের ছেড়ে মা আজ পিতৃগৃহ থেকে কৈলাশে ফিরে যাবেন। বাঁধনহারা হতে হবে ভক্ত পূজারীদের। গেল ক’দিন ব্যাপক আনন্দ উদ্দীপনার পর আজ প্রতিমা’ বিসর্জনের বেদনায় ভারাক্রান্ত হৃদয়ে চলছে বিসর্জনের আয়োজন ও আনুষ্ঠানিকতা। গতকাল সোমবার (২৩ অক্টোবর) ছিল মহা-নবমী। মন্ডপে মন্ডপে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ছিল উপচেপড়া ঢল। মহা-নবমী পূজা শেষে মন্ডপে মন্ডপে অঞ্জলী প্রদান, চন্ডীগ্রন্থ পাঠ, প্রার্থনা ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। মহা-নবমী পূজায় সর্বস্তরের মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে দুর্গা প্রতিমার মুখদর্শননে মুগ্ধ হয়ে আনন্দ উপভোগ করেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি মন্ডপে মন্ডপে ভিড় করেন অন্য ধর্মাবলম্বী তরুণ-তরুণী ও আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। হিন্দু সম্প্রদায়ের এ উৎসব যেন পরিণত হয়েছে সর্বজনীন উৎসবে।
ময়মনসিংহ নগরিতে রাকৃষ্ণ মিশনের কুমারী পূজা ও শিববাড়ীতে মহিলাদের পরিচালিত দুর্গোৎসব ছিল আকর্ষণীয়। শারদীয় দুর্গোৎসবে বর্ণিল সাজে সেজেছে ময়মনসিংহ শহরের পূজামন্ডপগুলো। সকাল থেকেই শহরের পূজামন্ডপ গুলোতে ভক্ত-পূজারীদের ভিড় দেখা যায়। বিকাল বেলা থেকে পূজামন্ডপগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। গভীর রাত পর্যন্ত শহরের পূজামন্ডপের পাশের রাস্তাগুলো দর্শনার্থীদের জনস্র্রোতে পরিণত হয়। ময়মনসিংহ নগরির অলকা নদী বাংলা মন্ডপ, মহিলাদের ধারা পরিচালিত শিববাড়ী পূজা মন্ডপ, আঠারবাড়ী বিল্ডিং, গোলপুকুর পাড়, মৃত্যুঞ্চয় স্কুল রোড, দুর্গাবাড়ী, দশভূজা বাড়ী, বড়কালী বাড়ী, ছোট কালীবাড়ী, ভাতৃসংঘ, কবরখানা রোড, মেছুয়া বাজার, জাদব লাহেড়ী লেন, ডাইলপট্রি, জিলপি পট্রি, হিন্দু ধর্মশালা, স্বদেশী বাজার, পুরাতন পুলিশ ক্লাব, পুরুহিত পাড়া, গঙ্গাদাস গুহ রোড, প্রভু জগৎবন্দু আশ্রম, শ্রীশ্রী লোকনাথ মন্দির, দাসপাড়া, কালী বাড়ী বাইলেন, রঘুনাথজিউর আখরা, ছোট বাজার, বড় বাজার, বিশ্বনাথ মন্দির, পাটগুদাম, র‌্যালীমোড়, নটকঘর লেন, বলাশপুর বর্ম্মণ পাড়া, বয়ড়া, নওমহল, হরিজন পল্লী, এসমস্ত পূজা মন্ডপগুলো আকর্ষণীয় করে সাজানো হয়েছে। আর এসকল মন্ডপগুলোতে দর্শনার্থীদের ভীড়ও ছিল প্রচন্ড। পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন শৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যদেরও কাজ করতে দেখা গেছে। আনন্দঘন পরিবেশে ভক্তরা মাকে প্রণাম করছে এবং মন্দির থেকে মন্দিরে ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দর্শন করেন। অন্যবারের তুলনায় এবারের পূজায় মন্ডপগুলো অনেক সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। প্রতিটি পূজামন্ডপে আকর্ষণীয় আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শংকর সাহা জানান, আজ বিকাল সাড়ে ৩ টায় মন্দিরে মন্দিরে মহিলাদের সিঁদুর খেলা ও পরে ব্রহ্মপুত্র নদে কাচারীঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে। ইতোপূর্বে সিটি মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু প্রতিমা নিরঞ্জনের ঘাট পরিদর্শন করেন এবং প্রতিমা নিরঞ্জনের সুবিধার্থে যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আর এর মধ্য দিয়েই শেষ হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসবের। এবছর ময়মনসিংহ জেলায় ৮৩৫টি দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উৎসব মুখর বাঙ্গালী মেতেছিল আনন্দ উৎসবে। পূজা অনুষ্ঠানের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আনসার, পুলিশসহ সকল বিভাগ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এ রিপোর্টস লেখা পর্যন্ত কোথায়ও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।