স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহে অনিয়ম, দূর্নীতিসহ নানা অভিযোগের ঘটনায় দায়ের হওয়ায় ৬০টি সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গণশুনানী করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এতে জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকল দফতরের কর্মকর্তারা অংশ গ্রহন করেন।
এ সময় গণশুনানীর নোটিশ পেয়েও উপস্থিত না থাকার কারণে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন তত্ত্বাবধায়ক (সুপারিন্টেডেন্ট) এস.এম নাজমুল হক খানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেয়া হয়।
সোমবার (১৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নগরীর টাউন হল তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে এই গণশুনানীর আয়োজন করে দুদক বিভাগীয় ও জেলা সমন্বিত কার্যালয়।
এ সময় সেবা বঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হওয়ায় ভুক্তভোগীদের দায়ের করা ৬০টি অভিযোগের গণশুনানী করেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মোঃ জহুরুল হক। এতে অভিযোগকারি বিচার প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট দফতরের জবাবদিহি কর্মকর্তারা উপস্থিত হলে শুনানীর মাধ্যমে বেশির ভাগ অভিযোগের নিস্পত্তি করা হয়।
এ সময় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সদর সাবরেজিস্ট্রার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রেলওয়ে, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সোনালি ও কৃষি ব্যাংক, জেলা প্রশাসন, বিআরটিএ ও সমাজসেবা কার্যালয়ের বিরুদ্ধে উত্থাপিত বেশ কিছু অভিযোগ আগামী সাত দিনের মধ্যে নিস্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে যে সব অভিযোগ ও ঘটনার সাথে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ ও নির্দেশনা রয়েছে তা খতিয়ে দেখে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পালন করারও নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার (তদন্ত)।
এই গণশুনানীর মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ মোস্তাফিজার রহমান। এর আগে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আবুল হোসেন।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মোঃ জহুরুল হক বলেন, প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এই পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত সমাজে তারা ভিআইপি ও সিআইপি হিসেবে পরিচিত। এই অবস্থায় ‘দুর্নীতি প্রতিরোধের চেয়ে নিজেকে দুর্নীতি মুক্ত রাখব’ এই শ্লোগান বাস্তবায়নের জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ জন্য আমি চাই ময়মনসিংহ দুর্নীতি মুক্ত মডেল জেলা হিসেবে দেশে পরিচিতি লাভ করুক। এজন্য সকলের সহযোগীতা ও আন্তারিকতা অপরিহার্য।
এই দুদক কর্মকর্তা আরও বলেন, দেশে ২৭টি দফায় দুর্নীতি হয়। এর মধ্যে দুদক শুধুমাত্র একটি দফা নিয়ে কাজ করে থাকে। বাকি ২৬টি দফা সরকারের অন্যান্য দফতর নিয়ন্ত্রন করে। তবে দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট ২৭টি দফাই দদুকে হস্থান্তরের জন্য সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির কাছে একটি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে।
এছাড়াও গণশুনানীতে বিশেষ অতিথি হিসিবে আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ রেঞ্জ (পুলিশ) ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, দূর্নীতি দমন কমিশনের (প্রতিরোধ) মহাপরিচালক মোঃ আক্তার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা। এর আগে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দুদক ময়মনসিংহ বিভাগের পরিচালক ঋত্বিক সাহা। এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট চক্ষু চিকিৎসক ডাঃ হরিশংকর দাস।
আপনার মতামত লিখুন :