ভাঙ্গারিতে শিক্ষার্থীদের বই বিক্রি : তদন্তে ব্যবস্থা দায়ীদের বিরুদ্ধে


swadeshsangbad প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৯, ২০২২, ১:২১ অপরাহ্ন / ২২৯
ভাঙ্গারিতে শিক্ষার্থীদের বই বিক্রি : তদন্তে ব্যবস্থা দায়ীদের বিরুদ্ধে

২০২২ সালের শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে আরও দেড়মাস বাকী। ৬ষ্ঠ হতে ৯ম শ্রেণির নতুন বই ভাঙ্গারিতে বিক্রির অভিযোগের সততা পাওয়া গেছে। আজ শনিবার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আন্ধারিয়াপাড়া হুকুমচাঁদা গ্রামের আজিজুলের বাড়ীতে গিয়ে দেখা গেছে ৮ বস্তা অব্যবহৃত বই মওজুত করে রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বই না দিয়ে বিক্রি করা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী জানান।
জানা যায়, হুকুমচাঁদা গ্রামের আজিজুল বিভিন্ন জায়গা হতে পুরাতন জিনিসপত্র ক্রয় করে এনে তার নিজ বাড়ী হতে আবার বিক্রি করেন। অর্থাৎ তিনি ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন। গত বৃহস্পতিবার ফুলবাড়িয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ত্রিশাল উপজেলার রওশনআরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে ৩৯ টাকা কেজি ধরে ৫৩০ কেজি বই ও খাতা ক্রয় করেন আজিজুল। বই বুঝে আনার সময় স্কুলের হুমায়ুন স্যার, রোকন স্যার, দেলোয়ার কেরানী অন্যান স্টাফরা উপস্থিত ছিলেন। হুমায়ুন স্যারের কাছে ৩৯ টাকা ধরে ৫৩০ কেজি বইয়ের সর্বমোট ২০,০০০ টাকা প্রদান করে বই ও খাতা কিনেন। ঐ সময় হেড মাস্টার স্কুলে উপস্থিত ছিলেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুতুবখানা বাজারের পশ্চিমে হুমুকচাঁদা গ্রামে আজিজুল নিজ বাড়ীতে ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন। সেখানে প্লাস্টিকের ৮টি বস্তায় প্যাকেট করা বই। মুখ খুলতেই দেখা যায় বইয়ের মলাট ছিড়া কিন্তু বইয়ের পাতায় পাতায় লেখা ২০২২। অনেক বস্তায় ২০২১ সালের বই একদম আস্ত (নুতন) দেখা যায়।
ভাঙ্গারির ব্যবসায়ী আজিজুল জানান, বইগুলো স্যার ও কেরানীদের উপস্থিতিতে আমাকে মাপ দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ঐ সময় থেকে বইয়ের কভার পৃষ্টা ছিড়া। কোন সনের বই আমি জানিনা। তারা আমাকে নগদ টাকায় বই খাতা বুঝিয়ে দিয়েছে। ৮ বস্তা বই আছে।
৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক রাজু মিয়া জানান, আমার মেয়ে সবগুলা বই পায় নাই। আমার চাচাতো বোন এর পুরাতন বই এনে আমার মেয়ে পড়ছে।
কমিটির অভিভাবক সদস্য কফিল উদ্দিন, সুলতান মিয়া ও আজিজুল হক বলেন, এমনিতেই সারাদেশে বইয়ের সংকট অথচ আমাদের ম্যাডাম মেয়েদের বই না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেন। এই বিষয়ে মিটিং এ কোনদিন উঠায় নাই। সে বেশি বেশি চাহিদা দিয়ে বইয়ের সংকট তৈয়ার করতে চায়। আমরা যারা কমিটির সদস্য তাদের এবং স্থানীয় এলাকাবাসী যারা স্কুলটির শুভাকাঙ্খী তাদের তিনি কখনো মুল্যায়ন করেন না।
প্রধান শিক্ষক আছমা আক্তার এর কাছে স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও ২০২২ সালের চাহিদার পরিসংখ্যান জানতে চাইলে পাওয়া যায়নি। তবে উদ্বৃত্ত বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে পাঠিয়ে দিবেন বলে জানান। পুরাতন খাতা বিক্রি করার সময় কিছু বই চলে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মফিজুল ইসলাম বলেন, আমাকে হেড মাস্টার রাতে ফোন দিয়ে পুরাতন বই বিক্রি করার নিয়ম জানতে চাইছিল। আমি তাকে বলেছি অব্যাবহৃত বই থাকলে সেগুলো উপজেলায় জমা দিতে দিবে। সেগুলো উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। যদি পুরাতন খাতার সাথে বই চলে গিয়ে থাকে তাহলে ফেরত নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।
ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।