রঞ্জন মজুমদার শিবু : স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এঁর ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৫ আগষ্ট) সকাল ১১টায় নগরীর জেলা পরিষদের ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া। এসময় তিনি শহীদ শেখ কামালের স্মৃতিচারণ করে বলেন, শেখ কামালের ২৬ বছর জীবনের ইতিহাস যদি আপনারা পড়েন, তাহলে অল্প সময়ে অনেক কিছুই খুঁজে পাবেন। তিনি একাধারে মুক্তিযোদ্ধা, আর্মি ক্যাপ্টেন, সেতার বাদক, গায়ক, নাট্য ব্যক্তিত্ব, ক্রীড়া সংগঠক এবং দেশীয় সংস্কৃতি পুরধা পুরুষ ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠক হিসেবে স্বাধীনতা যুদ্ধেও তাঁর অবদান রয়েছে। এর থেকে বুঝতে পারি একটি মানুষ চাইলে অনেক কিছু হতে পারে। বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরী করতে হবে যাতে তারা ভাল ভাবে গড়ে উঠতে পারে। শেখ কামালের আদর্শ আজকের প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রহণ করতে হবে এবং নিজেদের মাঝে ধারণ করতে হবে। পরবর্তী প্রজন্ম যেন শেখ কামালের সঠিক ইতিহাস জানে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। তারুণ্যের জন্য শ্রেষ্ঠ উদাহরণ শেখ কামাল। আসলে তিনি কী ছিলেন না। অসম্ভব মেধার অধিকারী ছিলেন তিনি। শেখ কামালকে সামনে রেখে আমরা কী হতে পারি, সে ভাবনা নিয়ে সুনিদিষ্ট পথ বেছে নিয়ে সেই পথে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের স্মার্ট নাগরিক হতে হবে। আর এই স্মার্ট নাগরিক হতে হলে তাকে সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। শেখ কামাল বিশাল উদাহরণ আমাদের মাঝে। তিনি আমাদের অনুপ্রেরনা।
জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা, জেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি এহতেশামুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল প্রমুখ। আলোচনা সভায় ময়মনসিংহ বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, শেখ কামালের মতো আমরাও হতে পারিনি, সে সময়ে তিনি সময়ের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। ইতিহাস সময়ের ঘটনাকে সত্য আকারে প্রকাশ করবেই। একজন আর্দশ ও স্মাট মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়তে শেখ কামাল আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে ৫জন ব্যক্তিকে গাছের চার বিতরণ করা হয়।
এছাড়া শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ভবনে ড্রপডাউন ব্যানার টানানো হয়। সার্কিট হাইজ মাঠে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা হয়। শহিদ শেখ কামালের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মসজিদ/মাদ্রাসায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলে আয়োজন করা হয়। মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থা করা হয়।
জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে শেখ কামালের জীবনীভিত্তিক ডকুমেন্টারি/প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক চারা গাছ ও যুব ঋণ বিতরণ করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :