পিবিআই কর্মকর্তা সেজে প্রতারণার অভিযোগে এক প্রতারক গ্রেফতার


swadeshsangbad প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৬, ২০২৩, ২:০৯ অপরাহ্ন / ১২৬
পিবিআই কর্মকর্তা সেজে প্রতারণার অভিযোগে এক প্রতারক গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার : পিবিআই কর্মকর্তা সেজে প্রতারণার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেফতার করল পিবিআই, ময়মনসিংহ। ৬ জানুয়ারী ময়মনসিংহ জেলার ঈম্বরগঞ্জ থানাধীন উচাখিলা এলাকা হতে প্রধান আসামী আব্দুল কাইয়ুম অনিককে গ্রেফতার করে।
গত ০২ জানুয়ারী/২৩ সন্ধ্যায় মোঃ আব্দুর রাশেদ ওরফে রাশিদুল ইসলাম রাশিদ (৩০) ঈশ্বরগঞ্জ থানাধীন উচাখিলাস্থ তার সেবা ডায়গনস্টিক সেন্টারে অবস্থানকালীন সময়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিজেকে পিবিআই ময়মনসিংহ এর এসআই ফারদিন আহম্মেদ পরিচয় দিয়ে কল করে জানায়, “তোমার নামে পিবিআইতে একটি মামলা হয়েছে এবং মামলার ওয়ারেন্ট আছে। তুমি আমাদের নগদ/বিকাশ ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা পাঠাও, আমরা আসবনা, মামলাটি এখানে শেষ করে দিব। আর তোমার ইমু নম্বরটি দাও। আমরা মামলার কপি ও ওয়ারেন্ট পাঠাচ্ছি। রাশিদুল ইসলাম তার ইমু নাম্বারটি অজ্ঞাত প্রতারকদের দিলে তারা রাশিদুলের ইমু নাম্বারের আইডিতে পুলিশী মনোগ্রাম যুক্ত একটি ভূয়া প্রাথমিক তথ্য বিবরনীর কপি প্রেরণ করে। যাহা প্রতারক চক্র সুচতুরতার সাথে কাল্পনিক এফআইআরটি তৈরি করেছিল। যাতে আসামীর কলামে “এপি-স্কুল রোড, উচাখিলা, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সেবা ডায়গনস্টিক সেন্টার, মোঃ রাশিদুল ইসলাম রাশিদ লেখা”।
তদন্তকারী কর্মকর্তার কলামে মামলাটি পুলিশ উপ পুলিশ পরিদর্শক ফারদিন আহম্মেদ, জেলা পিবিআই তদন্ত তদারকি করবেন” মর্মে লেখা আছে। পরবর্তীতে গত ০৩ জানুয়ারী সকালে ও বিকালে অজ্ঞাত প্রতারকরা রাশিদুলের মোবাইল নম্বরে ফোন করে তাদের নগদে/বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাতে বলে এবং টাকা না পাঠালে পিবিআই অফিস ময়নার মোড়, ময়মনসিংহে টাকা নিয়ে আসতে বলে। রাশিদুল ইসলাম বিষয়টি নিয়ে তার পরিচিতজনদের সাথে আলোচনা করে পিবিআই, ময়মনসিংহ অফিসে যোগাযোগ করেন। পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা হতে তাকে জানানো হয় ফারদিন আহম্মেদ নামে কোন পুলিশ কর্মকর্তা এখানে কর্মরত নাই। তখন রাশিদুল ইসলাম পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পিবিআই পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার বরাবরে একটি অভিযোগ প্রদান করেন।
অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই, ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার এর সার্বিক সহযোগীতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই অমিতাভ দাস অভিযোগটির বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করেন।
পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার এর দিক নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে অজ্ঞাতনামা প্রতারকদের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হন। বিষয়টি রাশিদুল ইসলামকে জানালে তিনি পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার সহযোগীতায় ঈশ্বরগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন। তৎপ্রেক্ষিতে ঈশ্বরগঞ্জ থানার মামলা নং-০২, তাং- ০৫/০১/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-১৭০/৩৮৫/৪২০/৪৬৮/৪৭১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
এ বিষয়ে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার বলেন, এটি পিবিআইএর নামে প্রতারণার মত একটি দুঃসাহসিক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। মামলা রুজুর পর পরই প্রতারকদের গ্রেফতারে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্ষিপ্রতার সাথে গতকাল শুক্রবার ঈশ্বরগঞ্জ থানাধীন উচাখিলা এলাকা হতে প্রতারক চক্রের অন্যতম প্রধান আসামী আব্দুল কাইয়ুম অনিক কে গ্রেফতার করা হয়। প্রতারক চক্রের সকল সদস্যদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। উল্লেখ্য যে, এই মামলার প্রতারক চক্রের সদস্যগণ বৃহত্তর ময়মনসিংহে বিভিন্ন পাবলিক/সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, জাল-জালিয়াতিসহ ডিজিটাল প্রতারণার সাথে জড়িত। তাদের নামে প্রতারণার মামলা/মোকদ্দমা রয়েছে।