প্রত্যেক ধর্মেরই শিক্ষা হল মানুষের পাশে থাকা এবং সেবা করা- মেয়র টিটু


swadeshsangbad প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৫, ২০২২, ৩:৫৬ অপরাহ্ন / ২০৫
প্রত্যেক ধর্মেরই শিক্ষা হল মানুষের পাশে থাকা এবং সেবা করা- মেয়র টিটু

রঞ্জন মজুমদার শিবু : সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু বলেছেন, মানুষ মানুষের জন্য। আমাদের মাঝে কোন বৈষম্য বা বিভেদ নেই। মানুষকে সেবার মাধ্যমে সৃষ্টি কর্তার নৈকন্ঠ্য লাভ করা যায়। কোন ধর্মেই হীন কর্মকান্ডকে সমর্থন করে না। প্রত্যেকটি ধর্মেরই শিক্ষা হল মানুষের পাশে থাকা এবং সেবা করা। প্রায়সই মানুষের মাঝে একটি গোষ্ঠী বৈষম্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করে তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য এই কাজগুলো করে থাকে। সমাজের বিশৃঙ্খলা দূর করতে বিভিন্ন ধর্মে যুগে যুগে মহাপুরুষদের আবির্ভাব ঘটে এবং তারা মানুষকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশনা পরিষদ সারদা সংঘ আয়োজিত জগজ্জননী শ্রীশ্রী মা সারদাদেবীর ১৭০ তম জন্মতিথি পুজা এবং ময়মনসিংহ রামকৃষ্ণ মিশনের সাবেক অধ্যক্ষ স্বামী সর্বেশ্বরানন্দজী মহারাজ (দেবু মহারাজ) স্মরণে স্মরকগ্রন্থ প্রকাশনা উৎসবের “প্রাত্যহিক জীবনে মাসরদা” বিষয়ের উপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
মেয়র আরো বলেন, দেবু মহারাজের স্মারক গ্রন্থের উচ্চতা হয়তো ২ ইঞ্চি হবে কিন্তু তার যে মনের গভীরতা, ভালোবাসা, তার যে শ্রম, ঘাম, মেধা এবং আন্তরিকতা তা আমরা ২ কোটি ইঞ্চি দিয়েও শেষ করতে পারব না। মানুষকে কিভাবে ভালোবাসতে হয় তা দেবু মহারাজ আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন। কে কোন ধর্মের মানুষ তা তার কাছে বিবেচ্চ ছিল না। তিনি সব সময় মানুষকে সন্তান তুল্য মনে করতেন। বর্তমান সময়ে সমাজব্যবস্থাকে গড়ে তোলার জন্য এমন মানুষের প্রয়োজন। এই আশ্রমের আজকের যে পরিপাটি পরিবেশ তাও তিনি করে গেছেন। তিনি যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে আশ্রমের সন্দর পরিবেশ গড়ে তুলেছেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের বাঙ্গালী জাতির মহানায়ক আমাদের জাতীয়তাবাদকে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে তিনি জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মূল কথা মানুষের কাছে যেতে হবে মানুষের সেবা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকল ধর্মের মানুষ এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। মানুষকে ভালোবাসব, সন্মান করবো তবেই এই জগৎ সংসার শান্তিময় হবে।
রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশনা পরিষদ সারদা সংঘ আয়োজিত অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে পূজ্যপাদ স্বামী সর্বেশ্বরানন্দজী মহারাজের স্মরকগ্রন্থ “যে জীবন আলোর অধিক” এর অনলাইন মোড়ক উন্মোচন করেন ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ ও সম্পাদক শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাতœানন্দজী মহারাজ।
সারদা সংঘের সভাপতি শ্রীমতি অপর্ণা সরকারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মিশন স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. মারুফী খান, বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক রফিকুর রশিদ, রামকৃষ্ণানুরাগী শ্রী কৌশিক মজুমদার, প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী প্রফেসর সুমিতা নাহা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রফেসর ডাঃ ইকবাল কবির, রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশন এর অধ্যক্ষ স্বামী ভক্তি প্রদানন্দ মহারাজ। আরো বক্তব্য রাখেন সর্বশ্রীমতি বাঁশরী আচার্য, রতœা দাস, ইলা রাউৎ ও বর্ণালী সান্যাল, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি মুনসিগঞ্জ বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রীমতী রেখা গুণ, ড. মারুফী খান, ড. মানিক লাল দাস ও শ্রীমতি স্বপ্না চন্দ পন্ডিত। ছিলেন স্মারকগ্রন্থ সম্পাদক ডাঃ অরুণ কান্তি ঘোষ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বামী কল্যাণদানন্দ মহারাজ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বেদপাঠ, উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এর আগে জগজ্জননী শ্রীশ্রীমা সারদাদেবীর ১৭০ তম জন্মতিথি পুজা উপলক্ষ্যে ভোর ৫টায় মঙ্গলারতি, বেদপাঠ, প্রার্থনা ও ভজন কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ পূজারম্ভ, হোম। সকাল ৮টায় ভজন, সকাল সাড়ে ১০টায় পুস্পাঞ্জরী অনুষ্ঠিত হয। সকাল সাড়ে ১০টায় ধর্মালোচনা সভা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।