মো. আব্দুস ছাত্তার : ধনীর কোন দুলাল অথবা সমাজের কোন বিত্তবান অথবা কোন সমাজপতি সহায় সম্বলহীন স্বপন চন্দ্র দে এর দিকে না তাকালেও ভালোবাসা দিয়ে সিক্ত করেছেন ফুলবাড়িয়ার আলোচিত মানবিক সংগঠন পুটিজানার মিত্র ফাউন্ডেশন। মিত্রের ভালোবাসায় হাক ছেড়ে আকাশ পেয়েছেন স্বপন চন্দ্র দম্পত্তি।
জানা যায়, ফুলবাড়িয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের দেওগাঁও দেবগ্রামের বাসিন্দা স্বপন চন্দ্র দে। তার পিতা মৃত শ্রী শচিন্দ্র চন্দ্র দে। স্ত্রী, ১০-১১ বছরের এক মেয়ে, ৬-৭ বছরের এক ছেলে এবং ৪-৫ বছরের এক মেয়ে তার সংসার। নিজের কোন আবাদী জমি নেই। বাবার পৈত্তিক সম্পত্তিতে খুপড়ি ঘরে তার বসবাস। বসত ঘরের অবস্থা নিজে না দেখলে বুঝা যাবে না। বৃষ্টি না আসলে ভালই কেননা রাতের চাঁদ ও তারা দেখতে বাহিরে যেতে হয় না ঘরে থেকেই দেখা যায়। তবে শীতের তান্ডবটা একটু বেশিই মনে হয়। কারণ উপড় ও পাশ শীত ঝেঁকে বসে। যার কারণেই পুরাতন কাপড় দিয়ে চারদিকে আবৃত্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সংসারের রুটি রোজগার সেই উপরওয়ালাই (মহান আল্লাহ তা আলা) ভাল জানেন। তবে এ সংসারে নেই কোন হিংসা, বিদ্বেষ, মারামারি হানাহানি এবং পাওয়া, না পাওয়ার হিসাব। এ সব মানুষের চিৎকার অথবা কোন আওয়াজ সমাজপতিদের কানে কখনো পৌঁছায় না।
মিত্র ফাউন্ডেশন স্থানীয় এলাকার কিছু উঠতি বয়সের কিছু যুবকদের নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। তাদের কর্মকান্ডে ইতিমধ্যে এলাকায় ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। চারপাশে^র একটি সার্ভে রিপোর্ট তাদের কাছে সংরক্ষিত। নিজেদের আয় রোজগার থেকে ছিন্নমুল মানুষদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছে। ফাউন্ডেশন যারা গড়ে তোলেছেন তারা সবাই নিজেদের কাজে আতœনিয়োগ করে থাকেন। শ্রমিকদের পাশাপাশি ঐদিনটা যেন তারা উৎসর্গ করে থাকেন সহায় সম্বলহীন মানুষের জন্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বপন চন্দ্র দে এর বাড়িতে ঠাস ঠুস শব্দ। এগিয়ে যেতেই দেখা যায় ১০-১২ জন যুবক কাঁদে সিমেন্টের খুঁটি, কেউ কেউ কাঠ, অনেকে আবার মাটি গর্ত করার কাজে সহযোগিতা করছেন। দু’জন মিস্ত্রি ঘর দেওয়ার মুল কাজটি করছেন, তারা মুলত তাদের শারীরিক সহযোগিতা করছেন। দুপুর বেলা তাদের খাওয়ার জন্য রান্নাবান্নাও হচ্ছে। প্রায় লাখ টাকার কাজটি দশে মিলে ৭০-৮০ হাজার টাকায় সমাপ্ত করছেন। এ যেন ভিন্ন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, মিত্র গৃহায়ণ প্রকল্প, গৃহ নং- ০৩, ভালোবাসায় আবারো সিক্ত মিত্র পরিবারের প্রত্যেক সদস্য। মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় কিছুদিন আগে দেখে আসা চারিদিকে পুরনো ছেঁড়া কাপড় দিয়ে বেড়া দেয়া সেই জীর্ণ খুপরি ঘরটার জায়গায় মিত্র ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে একটি নতুন বসত ঘর। ভাঙ্গা চৌকি, ছেঁড়া ও পাতলা কয়েকটি কাপড়ের বিছানার পরিবর্তে নতুন চৌকি, লেপ-তোষক, বালিশ, বিছানার চাদর, পরিধানের নতুন বস্ত্র, সপ্তাহখানেক খাওয়ার মত খাদ্য দ্রব্যাদিসহ নতুন গৃহে অসহায় পরিবারটিকে প্রবেশ করাতে পেরেছি।
আপনাদের মত সেই সকল জনহিতৈষীদের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে, যারা মিত্র ফাউন্ডেশনের পাশে থেকেছেন, থাকছেন, মানবতার তরে, হয়েছেন মিত্র পরিবারের একজন। কৃতজ্ঞতা জানাই আপনাদের, মানবতায় পূর্ণ হোক আমাদের অন্তর। জয় হোক মানবতার।
আপনার মতামত লিখুন :