স্টাফ রিপোর্টার : গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ শরীফ আহমেদ এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সমকালীন বিশ্বের বিস্ময়কর নেতৃত্বের অধিকারী ছিলেন বিধায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শোষিত মানুষের মুক্তিতে তাঁর নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলেন। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের এ ইতিহাস জানানোর দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে জাতির পিতাকে হত্যাকান্ডর মাস্টার মাইন্ড ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান। সে দলটির নেতারা আজ আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি আইন পাস করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধ করে দিয়ে সংবিধানকে কলংকিত করেছেন। এসময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট চান। মঙ্গলবার (১৫ আগষ্ট) সকালে নগরীর টাউন হল এডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ১৫ আগস্ট এদিনে ৭৫ এর কালোরাতে বাঙালির অধ্যায়ে সংগঠিত হয়েছিল একটি বর্বর হত্যাকান্ড। ১৯৭৫ সালের এদিনে কাকডাকা ভোরে ধানমন্ডির ৩২নম্বর বাড়িতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে কতিপয় কুলাঙ্গার সেনা সদস্য। বাঙালি জাতির ললাটে এঁটে দেয় কলঙ্কের তিলক।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঞা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহ্তেশামুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এড.মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলার প্রত্যেকটি মানুষের হৃদয়ে আজীবন থাকবেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের মত কোন হত্যাকান্ড আমরা দেখতে চাই না। শেখ মুজিব ও বাংলাদেশের পতাকা বুকে ধারণ করার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথি রেঞ্জ ডিআইজি (এডিশনাল আইজিপি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, যে মানুষটি বিশ্বদরবারে আমাদের আত্মপরিচয় দিয়েছেন তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা ইতিহাসের দুর্ভাগ্যজনক কলংক। নতুন প্রজন্মকে জাতিসত্তার ইতিহাস জানাতে হবে। তিনি বলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান বঙ্গবন্ধুকে তথা রাষ্ট্রপ্রধানকে রক্ষার জন্য যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান। স্বাগত বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও দেশপ্রেম বাঙালির ইতিহাসকে মহিমান্বিত করেছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।
আলোচনা সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী জেলা পর্যায়ে আয়োজিত রচনা ও চিত্রাংকন, হামদ-নাত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। বাদ জোহর বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্ট নিহত সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গির্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। শহরের মোড়ে মোড়ে পোস্টার স্থাপন করা হয়।
আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিভাগীয় ও জেলার পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :