স্টাফ রিপোর্টার : “প্রবাসীর কল্যাণ, মর্যাদা-আমাদের অঙ্গীকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় তারাও সমান অংশীদার” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সারাদেশে প্রথমবারের মতো উদযাপিত হলো জাতীয় প্রবাসী দিবস।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দায় কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) কার্যালয়ে জেলা প্রশাসন, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস টিটিসি ময়মনসিংহ ও টিটিসি হালুয়াঘাট এর আয়োজনে উদযাপিত হলো জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৩। কর্মসূচির মধ্যে ছিল জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে টিটিসি প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা, দিনব্যাপী প্রবাসী মেলা ও জব ফেয়ার। বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণ, সম্ভাব্য অভিবাসী, বিদেশ ফেরত অভিবাসী এবং প্রবাসীদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করে তোলে। বর্তমান বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নমূলক সংস্থা ব্র্যাক’র পরিচালিত “ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম” উক্ত আয়োজনে অংশগ্রহণ করে।
এদিন সকালে কর্মসূচির শুরুতেই টিটিসি প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে টিটিসি’র চত্বর প্রদক্ষিণ করে। র্যালি শেষে টিটিসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক অমিত সরকার এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন টিটিসি ময়মনসিংহের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ মাহতাব উদ্দিন, হালুয়াঘাট টিটিসি’র অধ্যক্ষ কাজী সিরাজুদ্দোহা। আরও বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম, ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ময়মনসিংহ ব্রাঞ্চের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মোঃ সোহরাব হোসেন, কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি অপারেশন মারফত আলী প্রমুখ।
উক্ত আলোচনা সভায় বিশেষ বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের মাইগ্রেশন এন্ড রিইন্টিগ্রেশন সাপোর্ট সেন্টার, ময়মনসিংহের কো-অর্ডিনেটর মোঃ নাসিম উদ্দিন। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের নানানিধ কর্মকান্ড তুলে ধরে ব্র্যাক কো-অর্ডিনেটর বলেন, ইউরোপের ইউনিয়ন এবং ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে পরিচালিত “Improved Sustainable Reintegration of Bangladeshi Returnee Migrants-Prottasha-II” প্রকল্পটি এই বছর ময়মনসিংহে শুরু হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটি সারা দেশে ১৫ টি মাইগ্রেশন এন্ড রিইন্টিগ্রেশন সাপোর্ট সেন্টার (এমআরএসসি) থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে যার মধ্যে ময়মনসিংহ এমআরএসসি অন্যতম। এই প্রকল্পটি বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের পুনরেকত্রীকরণে কাজ করে যাচ্ছে।” এ ছাড়াও তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রবাসীদের অবদান, সমস্যা এবং সম্ভাব্য সমাধান তুলে ধরেন। বক্তব্যের শেষে উপস্থিত সকলের কাছে প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনায় সহযোগিতা কামনা করে তিনি।
উক্ত আলোচনাসভায় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আরোহণকারী ব্যাংক, সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরনকারী একজন নারী এবং একজন পুরুষকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
আলোচনা সভা শেষে প্রবাসী মেলা ও জব ফেয়ার স্টল পরিদর্শন করেন। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের স্টলে নানাবিধ কর্মকান্ডকে ফেস্টুন, বই, লিফলেট, চরকী, ব্রোশিউরের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের স্টলে ছিলেন এমআরএসসি ময়মনসিংহের সেক্টর স্পেশালিস্ট ইকোনমিক রিইন্টিগ্রেশন মোঃ মঞ্জুরুল মোমেনীন, সাইকো স্যোশ্যাল কাউন্সিলর শেখ হাবিবা আমজাদ এবং বিভিন্ন উপজেলার প্রোগ্রাম অর্গানাইজারবৃন্দ। মেলা পরিদর্শনে আসা সম্ভাব্য অভিবাসী, বিদেশ ফেরত অভিবাসী, প্রবাসী সকলকে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের নানাবিধ কর্মকান্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানান তারা।
উল্লেখ্য, গত বছর ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় প্রবাসী দিবস করার প্রস্তাব অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা পরিষদ বিভাগ দিবসটিকে খ শ্রেণী ভুক্ত করে পরিপাত্র জারি করে, এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো দেশে জাতীয় প্রবাসী দিবস পালিত হল। দিবসটি উপলক্ষে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) নিরাপদ, নিয়মিত ও বৈধ অভিবাসন নিশ্চিত করতে জেলায় জেলায় প্রবাসী মেলা ও জব ফেয়ারের আয়োজন করেছে। জব ফেয়ারে আবেদনের প্রেক্ষিতে চার জনকে চাকুরী দেয়া হয়।
বক্তাগণ বলেন, প্রবাসীদের কঠোর পরিশ্রমের ফলে আমাদের দেশে যে রেমিটেন্স আসছে তাতে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। আমরা ভালো আছি। রাষ্ট্রের জন্য প্রবাসীদের ভ’মিকা অনেক বেশী। করোনা কালীন সময়েও বিশ্বে যখন হাহাকার তখন আমাদের দেশের প্রবাসী তাদের কষ্টে উপর্যিত রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের রির্জাভ ধরে রেখে ছিলেন। প্রায় দেড় কোটি লোক বিদেশে থাকে। তারা সামাজিক এবং বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে ভ’মিকা রাখছে।
আপনার মতামত লিখুন :