স্টাফ রিপোর্টার : “পরিকল্পিত বাস যোগ্য নগরায়ণ, হাওর, নদী, বিল রক্ষায় আমাদের পরিবেশ ভাবনা” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ( বাপা) এর ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৯ জানুয়ারী) বিকেলে নগরীর জেলা পরিষদের ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন লক হ্যাভেন বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকা এবং বিইএন এর সমন্বয়ক প্রফেসর ড, খালেকুজ্জামান। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন এর সহ-সভাপতি প্রফেসর নূর মোহাম্মদ তালুকদার এর সভাপতিত্বে সভায় সন্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান, ময়মনসিংহ নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আমিন কালাম। নদী বিষয়ক আলোচনা করেন বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক ফরিদুল ইসলাম। পরিবেশ বিষয়ে আলোচনা করেন ময়মনসিংহ বাপা’র আহবায়ক কাজী আজাদ জাহান শামীম, জামালপুর বাপা আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল্লা, ময়মনসিংহ বাপা সদস্য সচিব খন্দকার ফারুক আহমেদ, জামালপুর জেলা বাপা সদস্য সচিব মোঃ এনামুল হক, ভালুকা বাপা আহবায়ক শাহ মোঃ আশরাফুল হক জজ, সদস্য সচিব মোঃ কামাল হোসেন, নেত্রকোনা প্রতিনিধি মাসুম বিল্লা, শেরপুর প্রতিনিধি সালাউদ্দিন আমিন প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন বিভাগীয় সমন্বয়ক ও বাপা কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ইবনুল সাঈদ রানা।
বক্তাগণ বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রতিককালে অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করছে এবং বহু রাস্তাঘাট, সেতু, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি নির্মিত হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু দেশের পরিবেশের দ্রুত অবক্ষয় সাধিত হচ্ছে। এই অবক্ষযের চিত্র সর্বত্রই দৃশ্যমান। এর প্রধানতম দৃষ্টান্ত হলো দেশের নদ-নদী ও জলাধারের পরিস্থিতি। বহু নদ-নদী শুকিয়ে গেছে এবং দখল হয়ে গেছে। খাল, বিল, পুকুর, দীঘি, হাওর, বাওর হারিয়ে যাচ্ছে, যা কিছু অবশিষ্ট আছে তা আজ চরমভাবে দূষিত। বহুস্থানে দূষণের কারণে নদী-তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িযেছে। দেশের বন এবং পাহাড়ের দিকে তাকালেও পরিবেশের প্রকট অবক্ষয় চোখে পড়ে। এমনিতেই বাংলাদেশে বনের পরিমাণ কম। কিন্তু যেটুকু ছিল তাও দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। শিল্পায়ন এবং নগরায়নের কারণে মধুপুর এবং গাজীপুরের শালবন বিলীন হওয়ার পথে। যানবাহন ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের কালো ধোঁয়া, নিয়ন্ত্রণবিহীন নির্মাণকাজ, ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় ইঁটের ডাঁটা স্থাপন, ইত্যাদি কারণে শহর এবং গ্রাম উভয় স্থানে বায়ু আজ দূষিত। কঠিন, তরল, এবং বায়বীয় বর্জ্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। প্লাস্টিক বর্জ্য দেশের সর্বত্র মাটি ও জলাশয়সমূহকে দূষিত করছে এবং ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বন্যার প্রকোপ বাড়ছে, জলাবদ্ধতা বিস্তৃত ও দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, এবং নদী ভাঙ্গণের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থান হারিয়ে যাচ্ছে। দেশের জীববৈচিত্র লোপ পাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ভারে দেশের প্রকৃতি ও পরিবেশ আরও ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে। পরিবেশের এই সামগ্রীক অবক্ষয দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিকে স্নান করে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি চায়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ২০০০ সনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থকে দেশের অন্যান্য পরিবেশ-দরদী সংগঠনকে সংগে নিয়ে পরিবেশ রক্ষার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এই সংগ্রামের ফলে অনেক সাফল্যও অর্জিত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :