স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ এর কার্যালয় মিলনায়তনে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে কার্প জেনেটিক ইম্প্রুভমেন্ট প্রোগ্রাম বিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত কর্মশালায় আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ার্ল্ডফিশ উদ্ভাবিত দ্রুত বর্ধনশীল জিথ্রি রুই বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে, ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ ওয়ার্ল্ডফিশ অ্যাকুয়াটিক ফুড বায়োসায়েন্স-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. জন বেঞ্জি’র কাছ থেকে জি থ্রি রুই মাছের পোনা গ্রহণ করেন।
উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশের মহাপরিচালক খ: মাহবুবুল হক। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত ২০৪১ সালে ৮৬ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে চাষের মাছের অবদানের বিকল্প নেই। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ওয়ার্ল্ডফিশ উদ্ভাবিত জিথ্রি রুই এবং বিএফআরআই এর সুবর্ণ রুই বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এজন্য রুই মাছ সহ কার্প জাতীয় মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে আরো গবেষণার উপর জোর দিতে হবে।
মৎস্য ও জলজ কৃষি গবেষণাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ফিড দ্যা ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর
ফিশের মাধ্যমে ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং
ওয়ার্ল্ডফিশ যৌথভাবে কর্মশালাটির আয়োজন করে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ফিড দ্য ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফিশ এবং ওয়ার্ল্ডফিশ-এর প্রায় ১০০ জন মৎস্য বিশেষজ্ঞ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ। তিনি তার সমাপনী বক্তব্যে মৎস্য গবেষণায় উন্নত জাতের মাছ উদ্ভাবন সম্পর্কে বলেন, বিএফআরআই দেশি মাছের জাত উন্নয়নে এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করে যাচ্ছে। রুই মাছের জাত উন্নয়নেও আমাদের গবেষণা চলছে। আপনারা জানেন আমরা চতুর্থ প্রজন্মের ’সুবর্ণ রুই’ উদ্ভাবণ করেছি। ওয়ার্ল্ডফিশ উদ্ভাবিত জিথ্রি রুইও সুবর্ণ রুইয়ের পাশাপাশি এদেশের মৎস্য খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
জাত উন্নয়নের এ কার্যক্রমে ওয়ার্ল্ডফিশ এর সাথে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য, যেমন ইউএসএআইডি’র ফিড দ্যা ফিউচার অ্যাকোকালচার অ্যান্ড নিউট্রিশন অ্যাক্টিভিটি, ফিড দ্যা ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেইটস ফাউন্ডেশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইফাদ প্রমুখ। এক দশক ধরে কার্প জাতীয় মাছ উন্নয়নের জন্য ওয়ার্ল্ডফিশ যে গবেষণা কার্য পরিচালনা করছে তারই ধারাবাহিকতার ফসল এ জি থ্রি রুই মাছ। ২০১২ সালে এই জি থ্রি রুই মাছের কার্যক্রম হালদা, পদ্মা এবং যমুনা নদী থেকে রেণু সংগ্রহের মাধ্যমে শুরু হয়। ২০২০-২০২১ সালে, প্রোগ্রামটি নির্বাচিত প্রজনন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৃতীয় প্রজন্মের রুই উদ্ভাবণ করে। যশোর এবং নাটোর-রাজশাহী অঞ্চলে পরিচালিত ফিল্ড ট্রায়ালে দেখা গেছে এ জাতটি প্রচলিত রুইয়ের চেয়ে ৩৭% বেশি বৃদ্ধি পেয়েছ্,ে এ প্রসঙ্গে ওয়ার্ল্ডফিশের সিনিয়র সায়েন্টিস ড. বিনয় কুমার বর্মন বলেন, আজকের এই কর্মশালা বিএফআরআই কে জিথ্রি রুই হস্তান্তরের মাধ্যমে কার্প জাতীয় মাছ চাষের সার্বিক উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করার একটি অনবদ্য প্রয়াস বলে মনে করি।
কর্মশালায় ফিড দ্যা ফিউচার ফিশ ইনোভেশন ল্যাবের এশিয়া রিজিওনাল কোঅর্ডিনেটর ড. এম
গোলাম হোসেন, ওয়ার্ল্ডফিশ অ্যাকুয়াটিক ফুড বায়োসায়েন্স-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. জন বেঞ্জি, ওয়ার্ল্ডফিশের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ম্যাথিও হ্যামিলটন সহ দেশের খ্যাতনামা
মৎস্য বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞগণ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :