স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ময়মনসিংহ জেলা শাখার উদ্যোগে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকালে ময়মনসিংহ নগরীর ফিরোজ জাহাঙ্গীর চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শামছুন্নাহার বেগম।
ময়মনসিংহ জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ চাঁন মিয়া এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন এর পরিচালনায় মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ত্রিশাল উপজেলা শাখার সভাপতি অবিনাশ চন্দ্র দাম, গৌরীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি এনামুল হক সরকার, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ শরাফ উদ্দীন, ফুলবাড়ীয়া উপজেলা শাখার সভাপতি এ কে এম সাইফুল ইসলাম কাজল, হালুয়াঘাট উপজেলা সভাপতি মোঃ আব্দুল জলিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও গৌরীপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুল হক, ময়মনসিংহ জেলা শাখা সাংগাঠনিক সম্পাদক আতা মোঃ আব্দুল্লাহ আল আমিন, ত্রিশাল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশীদ, ফুলপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ আজহারুল ইসলাম, ময়মনসিংহ জেলা শাখা সাস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আবুল কাশেম, প্রচার সম্পাদক মোঃ নাজমুল আহসান, জেলা কমিটির সদস্য ও গোয়াতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইসমাইল হোসেন, ত্রিশাল উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ইবনে খালিদ, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক সুলতান উদ্দিন, ফকর উদ্দিন, গোলাম রব্বানী, মোঃ মাহবুবউল আলম লিটন প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার প্রায় ৯৫% পরিচালিত হয় বেসরকারি-শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয় একই কারিকুলামের অধীনে একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যানের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য। এমপিওভুক্ত শিক্ষকগণ মাত্র ২৫% উৎসব ভাতা, ১,০০০ টাকা বাড়িভাড়া এবং ৫০০টাকা চিকিৎসা ভাতা পান বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয়। তাছাড়া সহকারি প্রধান শিক্ষকগণের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকগণের বেতন স্কেল ও সহকারি প্রধান শিক্ষকগণের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারি প্রধান শিক্ষকগণের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণ অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন। তাছাড়াও কয়েক বছর যাবৎ কোন প্রকান সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীগণের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হচ্ছে যা অত্যন্ত অমানবিক। ইউনেস্কো ও আইএলও’র সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষা খাতে বাজেটের ২০% অথবা জিডিপি’র ৬% বরাদ্দের কথা থাকলেও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে জাতীয়র বাজেটের ১১.৯২% অথবা জিডিপি’র ২% এরও কম বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে একটি যুদ্ধবিদধস্ত দেশে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছেন। পরিতাপের বিষয় দেশে প্রাথমিক ব্যতীত সকল স্তরে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু থাকায় একই দেশের নাগরিক হয়েও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবি। মানববন্ধন কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতির সদস্য বৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :