স্টাফ রিপোর্টার : মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণের দাবীতে কেন্দ্রিয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) ময়মনসিংহ জেলা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সোমবার (১৩ মার্চ) সকালে নগরীর ফিরোজা-জাহাঙ্গীর চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি বিটিএ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি মোঃ চাঁন মিয়া এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন এর সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শামছুর নাহার বেগম, জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আনোয়ার কবীর, জাফর আহম্মেদ চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল হক, এরশাদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আতা মো: আব্দুল্লাহ আল আমিন, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ভুট্টু, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, শিক্ষক নেতা এ কে এম সাইফুল ইসলাম কাজল, আব্দুল জলিল, শাহাদাত হোসেন, শফিকুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, শেখ লিয়াকত আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে নগলী প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষক-কর্মচারীগণ অংশ গ্রহণ করেন। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কান্তি চক্রবর্তীর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ জানান, আজ মঙ্গলবার ১৪ মার্চ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতয়ি করণের দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন সহ ছাত্র, শিক্ষক, অভিবাবক ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় এবং জাতীয়করণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে লিফলেট বিতরণ। এছাড়া াাগামী ২০ মাচৃ সোমবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মহাসবাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এরপরেও যদি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট ঘোষনাসহ আসন্ন জাতীয় বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা না হয়, তবে সারাদেশের হতাশ ও বিক্ষুব্দ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণ জাতীয় বাজেট ঘোষণার পরে কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য প্রদান কালে নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার প্রায় ৯৫% পরিচালিত হয় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয় একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য। এমপিওভ’ক্ত শিক্ষকগণ মাত্র ২৫% উৎসব ভাতা, ১,০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয়। তাছাড়া সহকারি প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহাকরি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহাকরি প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।
এছাড়া বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক/কর্মচারী টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। তাছাড়া কয়েক বছর যাবৎ কোন প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হচ্ছে যা অত্যন্ত অমানবিক।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯৭৩ সালে একটি যুদ্ধবিধস্ত দেশে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :