মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস নির্মাণসহ সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে- শাহজাহান খান


swadeshsangbad প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৩, ২০২২, ৪:৪৪ অপরাহ্ন / ১৮৭
মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস নির্মাণসহ সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে- শাহজাহান খান

স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি, জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান বলেছেন, বিজয়ের মাসে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যার আহবানে সাড়া দিয়ে এদেশের আবাল বৃদ্ধ বনিতা কৃষক শ্রমিক মজুর সকল শ্রেণী পেশার মানুষ নিজের জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল, ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা এবং লাল সবুজের পতাকা। স্মরণ করি শহীদ জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদ, নির্যাতিত ২ লক্ষ মা বোন এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধায় নগরীর ছোট বাজার (মুক্তিযোদ্ধা সরণি) মুক্ত মঞ্চে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান মালার চতুর্থ দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে তা তিনি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ আজ বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের নেপথ্যে নায়ক-হুকুমদাতা জিয়াউর রহমান। তিনি তখন প্রধান সেনাপতি ছিলেন। তিনি সব জেনেও বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করেননি এবং কোন প্রতিহতও করেননি। তাকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক বানানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জামাত ইসলামও জড়িত ছিল। তারা ষড়যন্ত্রকারী। মির্জা ফকরুল বলেন আর একটি মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। কার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ। তারা কি করেছে দেশের জন্য ধ্বংস ছাড়া। তারা দেশে আগুন সন্ত্রাস করেছে। ২০১৫ সালে তারা নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল পারে নাই। তারা পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে। কিন্তু আমরা থেমে থাকিনি এই নাশকতা আমরা রুখে দিয়েছিলাম। সকলের সমন্বয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের উপর বোমা হামলা শুরু করলো। এর পরেও আমরা পিছু হটিনি। আমরা সকল নাশকতা মোকাবেলা করেছি। পরাজয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে বাড়িতে পাঠিয়েছি।
তিনি বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ স্বাধীনতার পর কেউ খনন করেন্ িতাদের আমলে কোন ড্রেজার ছিল না। আমরা ক্ষমতায় এসে ড্রেজার ক্রয় করেছি। বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদের খনন কাজ চলমান আছে যা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিএনপির ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ সর্ম্পকে বলেন, তারা পল্টনেই সমাবেশ করবে। ১০ তারিখের পর তারা দেশ চালাবে। কিন্তু তারা আজ পরাস্ত। তারা বার বার ফাউল খেলে পা ভেঙ্গে যায়। আজ দেশ চালাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের হুমকি দেয়, কটুক্তি করে। ৭১ সালে যুদ্ধ করে পরাজিত করেছি আগামীতেও পরাজিত হবেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের বলেন, নিজেদের মধ্যে কোন বিভেদ নয় এক সাথে কাজ করতে হবে । তোমাদের প্রস্তুত হতে হবে। বিএনপি জামাতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এক সাথে কাজ করে শেখ হাসিনাকে জয়লাভ করতে হবে। বিএনপি আমলে দেশের কোন উন্নয়ন হয় নাই। কিন্তু বর্তমান সকারের সময়ে দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। খাদ্যে দেশ আজ সয়ংসম্পূর্ন। এছাড়া অন্য সকল সেক্টরেও এগিয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস নির্মান সহ সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি বলেন আমাদের অর্জন মানুষের মাঝে তুলে ধরতে হবে। দেশের জন্য কাজ করতে হবে। তাই দেশের সকল উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাবেক সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কালাম পাশার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এহতেশামুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল।
আলোচনা করেন আজকের বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাবেক সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল ফজল তালুকদার, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম মহানগর শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ তালুকদার, জেলা শাখার সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভ’ইয়া, মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম ফারুক, জেলা আওয়ামীলীগ সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক রেজাউল হাসান বাবু, মহানগর শাখার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর শহীদ উদ্দিন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হক রিপন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান নাজমুন নাহার মুক্তা, শারমিন খানম লামিয়া।
উপস্থাপনায় ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ আলম খান (সোহেল) ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এস এম রকিবুল বারী রকি। এসময় জেলা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ, আওয়ামীলীগ ও অংগ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সকল শহীদদের স্মরণে দাড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন বিভিন্ন সংগঠন।