ময়মনসিংহে তদবির-ঘুষ ছাড়াই পুলিশের চাকরি পেলেন ১৯৫ নারী পুরুষ


swadeshsangbad প্রকাশের সময় : মার্চ ১৬, ২০২৩, ৪:০২ অপরাহ্ন / ১৪৮
ময়মনসিংহে তদবির-ঘুষ ছাড়াই পুলিশের চাকরি পেলেন ১৯৫ নারী পুরুষ

স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকরি পেলেন ১৯৫ জন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে তিনটায় ওই পদে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ লক্ষে জেলা পুলিশের আয়োজনে পুলিশ লাইন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হানুল ইসলাম, শামীম হোসেন, ফাল্গুনী নন্দী, শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সোহেল মাহমুদ, নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা জানান, ময়মনসিংহে কোন প্রকার তদবির ও ঘুষ ছাড়াই পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পেলেন ১৯৫ জন। তারা আন্তরিক প্রচেষ্টায় নিজেদের মেধা ও যোগ্যতার মাধ্যমে শুধুমাত্র সরকারি ফি ১২০ টাকাসহ অন্যান্য খরচ মিলে ১৬০ টাকায় নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হানুল ইসলাম জানান, চাকুরি নয়, সেবা’ এই শ্লোগান সামনে রেখে এ বছর ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষা প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। গত ০১ ডিসেম্বর / ২০২২ বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেইনি রিক্রট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে জাতীয়ভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় । বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন কোটায় ময়মনসিংহ জেলার জন্য নিয়োগযোগ্য শূন্য পদ ১৯৫টি। এর মাঝে পুরুষ-১৬৬ জন এবং নারী-২৯। এর মাঝে ৬ হাজার ৬০৬ জন (নারী ও পুরুষ) চাকুরী প্রার্থী অনলাইনে আবেদন করেন। পরে ইভেন্টে ‘শারীরিক মাপ ও কাগজপত্র যাচাইকরণ’ পরীক্ষায় ১ হাজার ৭৯৪ জনের মাঝে ইভেন্টে দৌড়, পুশআপ, লং জাম্প এবং হাই জাম্পসহ ফিজিক্যাল শারীরিক সহনশীলতা পরীক্ষায়
কোন দালাল চক্র যাতে পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার শর্তে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করতে না পারে সে বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জদেরকে সজাগ থাকতে বলা হয়। এছাড়া ডিবি সব সময় তৎপর ছিল। এর আগে টিম মসজিদ, মন্দির, গির্জা, বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এবং বিট পুলিশিং সমাবেশে প্রান্তিক পর্যায়ের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের নিকট স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, দুর্নীতি ও প্রভাবমুক্ত পদ্ধতি অনুসরন করে যোগা প্রার্থী বাছাই করে পুলিশ নিয়োগের সংবাদটি পৌঁছে দেয়া হয়। একটি স্বচ্ছ নিয়োগ পদ্ধতি অনুসরন করে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করতে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম আমাদের কাজকে সহজ করে তোলে। এ জন্য তিনি জেলার সামাজিক, রাজনৈতিক, গণমাধ্যম ও অন্যান্য শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানান। একটি স্বচ্ছ, আধুনিক, প্রতিযোগিতামূলক ও সময়োপযোগী পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে পুরুষ সাধারণ কোটা-১০৩ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা-৩৯ জন, পুলিশ পৌষ্য কোটা-১৭ জন, আনসার ও ভিডিপি কোটা-১ জন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা-০৪ জন এবং এতিম কোটা-২ জন। পুলিশ সুপার আরো বলেন, নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে ৬৮ জন প্রার্থীর পরিবার চরমভাবে অসহায় ও দারিদ্র্য সীমার নিচে জীবন-যাপন করেন। তাদের মধ্যে ১২ জনের পিতা পেশা অটোরিক্সা ও সিএনজি চালক, কৃষক, দিনমজুর, বাস্তচ্যূত। শুধুমাত্র প্রার্থীরা তাদের মেধা যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতায় ১৯ জন প্রার্থী জিপিএ-৫.০০ প্রাপ্ত । তিনি আরো বলেন, এতিম কোটায় সরকারী শিশু পরিবার (বালক) ছোটবেলা থেকে বেড়ে উঠা ২ জন নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন।
অপরদিকে নারী প্রার্থী ২৯ জনের মধ্যে সাধারণ কোটায় ২৪ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩ জন, পুলিশ পৌষ্য কোটায় ২ জন। নারী প্রার্থীদের মধ্যে ১ম হয়েছেন তানজিনা আক্তার মিম। তার পিতা বাদল মিয়া পেশায় সিএনজি চালক। আধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ধন্যবাদ জানিয়ে পুলিশ সুপার মাছুম আহামেদ ভুঞা আরো বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আবশ্যিক শর্ত পালন সাপেক্ষে অনলাইনে আবেদন চাওয়া হলে মোট ১০ হাজার ৮০ জন চাকুরী প্রার্থী আবেদন করেন । যাচাই-বাছাই শেষে ৬৬০৬ জন প্রার্থীর আবেদন গৃহীত হয়। এর মাঝে শারিরীক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৪৭৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ১৬৭৭ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়। লিখিত পরীক্ষায় ৪৫৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়ে মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। নিয়োগ পক্রিয়ার সকল ধাপ সফলতার সাথে সম্পন্ন করে প্রাথমিকভাবে ১৯৫ জন আমাদের পরিবারের নতুন সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। স্বচ্ছ নিয়োগ পক্রিয়ায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিত্তে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ১৯৫ জন পুলিশ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গৃহীত সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়নে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি দৃঢ়তার সাথে ব্যাক্ত করেন।