স্টাফ রিপোর্টার : শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ১৮৮তম জন্মতিথি ও বার্ষিক উৎসব উপলক্ষে মযমনসিংহ রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুারি) সকালে ‘সনাতন ধর্ম ও শ্রীরামকৃষ্ণ’ বিষরে উপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য। সনাতন ধর্ম সর্ম্পকে তিনি বলেন, সৎ এবং অসৎ এই দুইটি শব্দকে যদি আমরা মনে রাখি তাহলেই আমরা সনাতন ধর্মকে খুব স্পষ্ট ভাবে ব্যপ্ত করতে পারব। সৎ হচ্ছে যা অবিনস্বর, যার কখনও কোন বিনাস হয় না। সৎ হচ্ছে অব্যক্ত। সেই অব্যক্ত পুরুষই হচ্ছেন পরমেশ্বর। আর অসৎ হচ্ছে এই বিশ্ব ব্রম্মান্ড। অসৎ মানে হচ্ছে যা বিনাশী। এই প্রকৃতিতে যা দেখছি সবই বিনাশীল। তিনি আরো বলেন, রামকৃষ্ণদেব যে শিক্ষা দিয়ে গেছেন তা আমরা যেন আমাদের জীবনে কাজে লাগাই। তিনি সাধনার উচ্চতম স্তরে চলে গিয়েছিলেন। এক সময় তিনি তার স্ত্রীকে একজন দেবী হিসেবে ভগবতীর অংশ হিসেবে দেখেছিলেন। সেটা সাধারণ মানুষের পক্ষে করা সম্ভব না। আমরা করতে গেলে সেটা আমাদের জন্য বিরম্বনা হবে। তিনি বলেন, আমরা একটা বিশৃংখলা অবস্থার মাঝে আছি। সেখান থেকে আমাদের মুক্তি পেতে গেলে আমাদের যে আদি ধর্মগ্রন্থ বেদে ফেরত যেতে হবে। বেদ সংহিতা, উপনিষদ এবং গিতা এই তিনটিকে যদি আমরা ধারণ করি তাহলেই আমাদের মাঝে শৃংখলা ফিরে আসবে। যখন জাত পাত এর ঝামেলায় অতিষ্ঠ হয়ে কৃষ্ট ধর্মে দিক্ষিত হচ্ছে শিক্ষিত হিন্দুরা। তখন শ্রীরামকৃষ্ণের আবির্ভাব হলো এবং তিনি সবাইকে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠনের চেষ্টা করেছেন। আমরা যদি তার এই আকুতিটুকু না বুঝে যত মত তত পথ বলে চেচাই তাহলে সেটি ভালোর চেয়ে খারাপ হবে। একটি পারমানবিক বোমাকে যদি ভালো ব্যবহার করেন তাহলে ভালো শক্তি তৈরী হবে কিন্তু সেটা যদি না বুঝে ব্যবহার করেন সেটা প্রচন্ড ক্ষতিকর হতে পারে। সে জন্য আমাদের বুঝতে হবে ঠাকুর রামকৃষ্ণ কি বলেছেন। তিনি সবাইকে নিয়ে যেমন সৈব, সাত্ত, বৈষ্ণ, সকলকে এব বাহুতলে আলিঙ্গন করে ধরে রাখতে চেয়েছিলেন। তিনি সকল মানুষের মাঝে প্রেম বিলাতে চেয়ে ছিলেন। আমাদের সমাজে যে অচলায়তন তৈরী হেেছ যে একই বাড়িতে পাঁচ হাড়িতে রান্না হচ্ছে কেউ আমিষ খাচ্ছে, কেউ নিরামিষ খাচ্ছে, কেউবা অন্য কিছু এগুলো থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এর জন্য আমাদের ধর্মের যে প্রকৃত স্বরূপ সেটি বুঝতে হবে। তিনি আরো বলেন, যারা মিশনে আসেন তারা স্বামী বিবেকানন্দের লেখা গুলো পড়বেন তাহলে আপনি এই সনাতন ধর্ম সর্ম্পকে কোন অস্পষ্টতা থাকবে না।
রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ভক্তিপ্রদানন্দ মহারাজ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আলমগীর মনসুর (মিন্টু) মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ শ্রী নীহার রঞ্জন রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শ্রীমতি ফালগুনী নন্দী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন সারদা সংঘ সভাপতি অপর্ণা সরকার। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বামী কল্যাণদানন্দ মহারাজ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরমানু বিজ্ঞানী ড. মানিক লাল দাশ। সঞ্চালনায় শ্রী সঞ্জীব হালদার, শ্রীসনৎ ধর মিতুল।