স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব-২০২৩ পালনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি প্রণয়নের জন্য প্রস্তুতিমূলক সভা ০৮ অক্টোবর (রবিবার) ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া এর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচ দিনব্যাপী (২০-২৪ অক্টোবর পর্যন্ত) শারদীয় দুর্গোৎসব পালনকে কেন্দ্র করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ বহুবিধ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে ১৪ই অক্টোবর মহালয়ায় নিরাপত্তা জোরদারসহ পুরো দুর্গাপূজায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা। এখন থেকেই প্রতীমা তৈরির স্থানসমূহে নিরাপত্তা প্রদান করা। ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত মূলপর্বে এবং পূজা বিসর্জন পরবর্তী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। প্রতীমা বিসর্জনের সর্বোচ্চ সময় দশমীর সন্ধ্যায়।
এ বছর ময়মনসিংহ বিভাগের ৪টি জেলার মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় ৮৩৫টি ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৮৮ টি, নেত্রকোনায় ৫৬২টি, জামালপুরে ২১১টি ও শেরপুরে ১৫৭টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৮৮ টি এবং চার জেলায় মোট ১৭৬৫টি পূজা মন্ডমে দুর্গাপূজার উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা পর্যায়ে প্রতিটি জেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক মনিটরিং টিম এবং উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে মনিটরিং টিম থাকবে। পূজামন্ডপে সিসি ক্যামেরা শতভাগ নিশ্চিত করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সামাজিক সম্প্রীতি কমিটি এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও তৎপর থাকবে। প্রতিটি পূজামন্ডপে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনীর সদস্য-উপপরিদর্শক এবং সহকারী উপ-পরিদর্শকের নেতৃত্বে টহল টিম থাকবে। পূজা চলাকালীন যানজট নিরোসনের ব্যাপারেও ট্রাফিক বিভাগের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া উৎসবটি পালন উপলক্ষ্যে প্রতিটি পূজামন্ডপে সার্বক্ষণিক আনসার সদস্য মোতায়েনসহ বিদ্যুতের সর্বোচ্চ সরবরাহ নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে জেনারেটর, আইপিএস, এসি-ডিসি বাল্ব রাখার পরামর্শ আলোচনায় উঠে আসে।
অতি গুরুত্বপূর্ণ পূজামন্ডপে নারী পুরুষ সদস্য মিলে ০৮জন আনসার সদস্য, মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপে ৬ জন এবং কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপে ৪জন আনসার সদস্য মোতায়েন করা থাকবে। এছাড়াও প্রয়োজনে রিজার্ভ ফোর্স বা ব্যাটেলিয়ান দেয়া হবে। ফায়ার সার্ভিস যোগাযোগ নাম্বারসহ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নিয়ে প্রস্তুত থাকবে।
বিসর্জনের পাঁচ দিন পূর্ব হতে বিসর্জনের পরদিন পর্যন্ত র্যাবের গোয়েন্দা টহল থাকবে, সাথে সাথে স্টেয়ারিং ফোর্স থাকবে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত র্যাবের ফোর্স জায়গায় পৌঁছে যাবে।
সম্প্রীতি ও পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য উপজেলা পর্যায়ের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের অবগত করে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পত্র দেওয়ার জন্য সভায় উল্লেখ করা হয়। পূজা কমিটির লোকদের সাথে মতবিনিময়ের জন্য উপজেলার ইমামদেরকে লিখিতভাবে অবগত করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতির বক্তৃতায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আলোচনায় যে সিদ্ধান্ত বা মতামতগুলো উঠে এসেছে তা যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে চমৎকার একটি উৎসব করা সম্ভব। অপতৎপরতা রোধ করতে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। সেটা যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমরা সবাই যদি সজাগ থাকি তাহলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এর পরিচালনায় সভায় স্থানীয় সরকার পরিচালক, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব), ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিভাগীয় এনএসআই কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের সচিব, ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ এর অপারেশন অফিসার, ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কারিগরি ডিজিএম, পিডিবি এর প্রতিনিধি, শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নেত্রকোনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি এড. রাখাল চন্দ্র সরকার, মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট তপন দে, মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী রকেট, ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রী এর সিনিয়র সহ-সভাপতি শংকর সাহা, নেত্রকোনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, জামালপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, শেরপুর জেলা পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ উপজেলা পর্যায়ের পূজামন্ডপের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :