স্বাধীনতার আগে আমরা সর্বক্ষেত্রে পাকিস্তানিদের শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়েছি-বিভাগীয় কমিশনার


swadeshsangbad প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৪, ২০২২, ৩:৫৯ অপরাহ্ন / ১৮৭
স্বাধীনতার আগে আমরা সর্বক্ষেত্রে পাকিস্তানিদের শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়েছি-বিভাগীয় কমিশনার

রঞ্জন মজুমদার শিবু : ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস বলেছেন, বিজয়ের মাসে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যার আহবানে সাড়া দিয়ে এদেশের আবাল বৃদ্ধ বনিতা কৃষক শ্রমিক মজুর সকল শ্রেণী পেশার মানুষ নিজের জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল, ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা এবং লাল সবুজের পতাকা। স্মরণ করি শহীদ জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদ, নির্যাতিত ২ লক্ষ মা বোন এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধায় নগরীর ছোট বাজার (মুক্তিযোদ্ধা সরণি) মুক্ত মঞ্চে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান মালার পঞ্চম দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, আজকের সবচেয়ে বড় অর্জন আমাদের এই স্বাধীনতা। মুক্তিযোদ্ধাদের দেশ প্রেম ও আতœ ত্যাগের কারণে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এই স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার আগে আমরা সকল ক্ষেত্রেই পাকিস্তানিদের শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়েছি। দেশকে মেধা শূন্য ও অকার্যকর করার লক্ষ্যে ওরা স্বাধীনতা লগ্নে দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার নীল নকশা করে এবং বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। কিন্তু ওদের নীল নকশার দুরভীসন্ধী বাস্তবায়ন করতে পারে নাই। আমরা আরো এগিয়ে যাচ্ছি। ওরা আমাদের অর্থনীতিকেও ধ্বংস করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু ও দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার কারণে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এখন আমরা সব সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে সকল সেক্টরে উন্নয়ন হয়েছে। গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০৪১ সালে আমাদের রূপকল্প হবে মাথাপিছু আয় সাড়ে ১২ হাজার ডলার, শিক্ষার হার হবে শতভাগ। সবচেয়ে বড় পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হয়েছে। যা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ী চলাচল করছে। কর্নফুলি টানেল বাস্তবায়নের পথে। প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে গেছে। দারিদ্রের হার অনেক কমে গেছে। শিক্ষার হার তিয়াত্তোর দশমিক। শিশু মৃত্যু মাতৃ মৃত্যু কমে গেছে। এছাড়াও গত কয়েকদিন আগে সারা বাংলাদেশে শতাধিক সেতু উদ্বোধন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২১ তারিখে ২ হাজার কিলোমিটার নবনির্মিত রাস্তার উদ্বোধন করবেন। দেশ সকল সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করতে হবে।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হারুন আল রশিদ সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এহতেশামুল আলম।
আলোচনা করেন মুক্তি বাহিনী গ্রুপ লিডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম দুলাল, সাবেক সহকারি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাবেক সভাপতি এডভোকেট নূরুজ্জামান খোকন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা কল্যাণ পরিষদ কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মীর আব্দুর রাশেদ সুজন, ওয়াকার্স পার্টি জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ সুজিত বর্মন, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান শাহীন, জেলা আওয়ামীলীগ সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবু সাঈদ দীন ইসলাম ফকরুল, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডস্ট্রি সহ-সভাপতি শংকর সাহা, জয়িতা পুরস্কার প্রাপ্ত নারী নেত্রী আনোয়ারা খাতুন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড সদর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মীর আবু নাসের জয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান শামীম আহমেদ।
উপস্থাপনায় ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রিমন মোঃ জামায়েল সামী ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম হাসিব। এসময় জেলা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ, আওয়ামীলীগ ও অংগ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সকল শহীদদের স্মরণে দাড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন বিভিন্ন সংগঠন।