স্টাফ রিপোর্টার ঃ দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রয়োজন বিদেশ গমনেচ্ছুদের নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা। কারণ নিরাপদ অভিবাসন ও বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ – একই সুতোতে গাঁথা দুটি বিষয়।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রেগ্রামের উদ্যোগে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বিআরডিবি হলরুমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রত্যাশা-২ প্রকল্পের আয়োজনে “নিরাপদ অভিবাসন ও বিদেশ ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ” শীর্ষক উপজেলা কর্মশালায় এই আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ’মি) সাঈদ মোহাম্মদ ইব্রাহীম। এসময় তিনি বলেন, ‘নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে পারলে তা আমাদের দেশকে এগিয়ে নেবে। দক্ষ শ্রম শক্তিকে নিজ নিজ সমাজে পুনরেকত্রীকরণ করা সহজ হবে।’ তিনি আরো বলেন, প্রশিক্ষিত না হয়ে বিদেশ গিয়ে কখনই নিজের অবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। বাস্তবতা বড়ই কঠিন। কাজের জন্য কখনও টুরিস্ট ভিসায় বিদেশ যাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, ব্র্যাকের প্রত্যাশা-২ প্রকল্পের কাজ চমৎকার। বিদেশ ফেরতদের সচেতনতার জন্য অবহিতকরণ সভা করলে আরো ভালো হয়। তাহলে প্রত্যাশা প্রকল্প সাফল্য মন্ডিত হবে।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এবং সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাক জেলা সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসূচিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কর্মসূচি হল মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রম ২০০৬ সাল থেকে দেশের অভিবাসন প্রবণ জেলাগুলোতে বিদেশগামী নারী ও পুরুষের মাঝে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে নিরাপদে অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন, অ্যাডভোকেসি ও নানাবিধ সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমআরএসসি কো-অর্ডিনেটর মোঃ নাসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের সৌদি আরব ফেরত অভিবাসী লায়লা আক্তার হ্যাপ্পি নিজের ৫ দিনের প্রবাস জীবন এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফেরত আসার বর্ণনা দেন।
সভায় আমন্ত্রিত অতিথি কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ময়মনসিংহের অধ্যক্ষ প্রকৌঃ মোঃ মাহতাব উদ্দিন বলেন, যে কোন দেশে যাওয়ার পূর্বে ওই দেশের ভাষা, আইন এবং যেকোন একটি কাজের বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে গেলে, বিদেশ গিয়ে হয়রানির সম্মুখীন হতে হবে না। কাজের দক্ষতা নিয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করে বিদেশ গেলে সেখানে ভালো বেতন প্রাপ্তি ও সুষম কাজের পরিবেশ পাওয়ার মাধ্যমে মূল্যায়িত হওয়ার সুযোগ বেশি।
এছাড়াও কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক অমিত সরকার,র্ পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ওয়েলফেয়ার সেন্টার ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুল হাসান তাহেরী, প্রবাসী কল্যণ ব্যাংক ব্যবস্থাপক কামরুল হাসান, আশা’র সিনিয়র জেলা ম্যানেজার সৈয়দ জাহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক, খতিব এবং বিদেশফেরত অভিবাসী।।
উল্লেখ্য, বিদেশ-ফেরত বাংলাদেশিরা যেন দেশে এসে ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারেন সেজন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে ব্র্যাক। ২০১৭ থেকে ২০২২ এই সময়ে প্রত্যাশার প্রথম ধাপ বাস্তবায়ন শেষে এখন দ্বিতীয় ধাপের কাজ চলছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে ইম্প্রুভড সাসটেইনেবল রিইন্ট্রিগ্রেশন অব বাংলাদেশি রিটার্নি মাইগ্রেন্টস (প্রত্যাশা-২) প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় অন্তত: ১০ হাজার জন মানুষ বিমানবন্দরে সহায়তা পাবেন। পাশাপাশি সাত হাজার ৭০০ জন বিদেশ ফেরত মানুষ যেন ফের দেশে আয় করতে পারেন সেজন্য তাদেরকে ধাপে ধাপে সহায়তা করা হবে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সংস্থা এবং সারাবিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এনজিও— ব্র্যাক, ১৯৭২ সালের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে দেশে ও দেশের বাইরে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসূচিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কর্মসূচি হল মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। ব্র্যাকের এই প্রোগ্রাম ২০০৬ সাল থেকে দেশের অভিবাসনপ্রবণ জেলাসমূহে বিদেশগামী নারী ও পুরুষের মাঝে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, বিদেশ ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, অভিবাসন খাতে অ্যাডভোকেসি ও নানাবিধ সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে।
আপনার মতামত লিখুন :